আন্দুল রাজবাড়ি – বাংলার রাজবাড়ীর খোঁজে

আন্দুল রাজবাড়ি

 

রাজবাড়ী বা জমিদার বাড়ির প্রতি টান আমার বরাবরের। এর মধ্যে বাংলার বেশ কয়েকটি রাজবাড়ী বা জমিদার বাড়ি দেখেছি। সেসব বিভিন্ন প্রতিবেদনে আপনাদের সামনে তুলেও ধরেছি।

একটা সময় ইচ্ছে থাকলেও সুযোগ ছিল না। সময় সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি। কখনো একা, কখনো সদলবলে। যাইহোক ব্যক্তিগত কথা আর বলবো না।

একবার মনে মনে একটা দৃশ্য কল্পনা করুন তো।

বাংলার কোন রাজবাড়ীর দুর্গাপুজোয় স্বয়ং লর্ড ক্লাইভ নিমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন, সময়টা পলাশীর যুদ্ধের পরে পরেই, আর লর্ড ক্লাইভ সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন দশ হাজার টাকার সন্দেশ, ১০০০ টাকার প্রণামী এবং দেবীর পুজোর জন্য ১০৮ টি পদ্ম।

তাহলে বুঝতেই পারছেন সেই রাজবাড়ীর সাথে লর্ড ক্লাইভ এর সম্পর্কের সূত্রটা কোন উচ্চতায় বাঁধা।

না, আমি শোভা বাজার রাজবাড়ির কথা বলছি না। কিন্তু এই রাজ বাড়ির সঙ্গে শোভাবাজার রাজবাড়ীর এবং লর্ড ক্লাইভের গভীর বন্ধুত্ব ছিল।

কারণ আমরা জানি ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে ভাগীরথী নদীতে বাংলা তথা ভারতের স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল।

এবং সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর সিরাজের কোষাগার যখন লুণ্ঠন হয়েছিল তখন শোভাবাজার রাজবাড়ী আর এই রাজবাড়ী সেই লুণ্ঠনের অংশীদার ছিল।

সেখান থেকে প্রচুর অর্থ ও মূল্যবান সম্পদ নিয়ে সরস্বতী নদীপথে এই আন্দুলে এসে এনারা ভূস্বামী হয়ে ওঠেন।

হেঁয়ালী ছেড়ে এবার সোজাসুজি বলি। আমরা বলতে চলেছি আন্দুল রাজবাড়ির কথা।

এই আন্দুল রাজবাড়ীর কথা বলতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে কয়েক শতাব্দী।

আন্দুলের বিখ্যাত মল্লিক পদবীর জমিদার গৌরী চরণ মল্লিক মতান্তরে গৌরীশঙ্কর বসু মল্লিক তার জামাতা ভুবনেশ্বর করকে, যৌতুক হিসেবে কিছু ভূসম্পত্তি দিয়ে বর্ধমান থেকে এই আন্দুলে নিয়ে আসেন। অবশ্য তখন এর নাম ছিল আনন্দধূলি গ্রাম।

এই গৌরীশংকর বসু মল্লিক বা গৌরী চরণ মল্লিক ছিলেন হাওড়ার আন্দুলের সর্বপ্রথম জমিদার বংশ, দত্ত চৌধুরী পরিবারের কাশীশ্বর দত্ত চৌধুরীর জামাতা। সময়কাল আনুমানিক ১৭ শতকের প্রথমার্ধ।

এই আনন্দধূলী নামেরও একটা ইতিহাস আছে। কথিত আছে শ্রীচৈতন্যদেব সপার্ষদ আজকের এই আন্দুলের মধ্য দিয়ে তিনি যখন পুরীধামে যাচ্ছিলেন, তখন সবার পায়ে পায়ে এত ধুলো উড়েছিল যে, চারিদিক আঁধার হয়ে গিয়েছিল।

সবাই বলেছিল এ হচ্ছে আনন্দধূলি। এই আনন্দধূলি লোকের মুখে মুখে ক্রমান্বয়ে আজকের এই আন্দুলে পর্যবসিত হয়েছে। শোনা যায় এটা পুরোটাই জনশ্রুতি। এর কোন বাস্তব ভিত্তি নেই।

আন্দুলের রাজ পরিবারের মধ্যে মূলত চারটি পরিবারের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই চারটি পরিবার হল যথাক্রমে দত্ত চৌধুরী পরিবার, কর রায় পরিবার, মল্লিক পরিবার এবং কুন্ডু চৌধুরী পরিবার।

আমরা শুধু এই কর রায় পরিবার নিয়েই আলোচনা করব। আন্দুল রাজবাড়ী প্রবক্তা হিসেবে যার নাম আমরা পাই তিনি হলেন ভুবনেশ্বর রায়ের পুত্র রামচরণ রায়।

পলাশীর যুদ্ধের বেশ কিছু বছর আগে, সম্ভবত ১৭৪০ সালে, এই আন্দুল বা আনন্দধূলি গ্রামের রামচরণ রায়, তখন তিনি একজন যুবক, মাসিক কুড়ি টাকা বেতনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে পিওন মতান্তরে উকিল হিসেবে নিযুক্ত হন।

যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতার সঙ্গে তিনি নিজের কাজ করেছিলেন। বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, আরবি, ফারসি প্রভৃতি ভাষার ওপর তাঁর দখল ছিল। তিনি ছিলেন একজন উদ্যোগী পুরুষ। এবং সে কারণেই তিনি লর্ড ক্লাইভের নজরে পড়েন।

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের সময় তার পদোন্নতি হয়। মাসিক ৬০ টাকা বেতনে কোম্পানির দেওয়ান পদে যোগ দেন। সেই সময় তিনি হুগলি থেকে মুর্শিদাবাদে বদলি হন।

পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পতনের পর কি ঘটেছিল তা শুরুতেই বলেছি। ১৭৬৪ সালে রবার্ট ক্লাইভ দ্বিতীয়বার গভর্নর হয়ে কলকাতা আসার পর রামচরণ আবারও লর্ড ক্লাইভের কৃপা লাভ করেছিলেন।

তদানীন্তন ভারত সম্রাট শাহ আলম, ক্লাইভকে খুশি করার জন্য তার অনুগত কিছু কর্মচারীকে রাজা উপাধি দানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। লর্ড ক্লাইভ দেওয়ান রামচরনের নাম সুপারিশ করলে, অত্যন্ত বিনয়ের সাথে,বয়সজনিত কারণের দোহাই দিয়ে, তিনি নিজে রাজা উপাধি গ্রহণ না করে, তার পুত্র রাম লোচন রায়কে রাজা উপাধি দানের জন্য অনুরোধ করেন।

লর্ড ক্লাইভ তাতে সম্মতি দেন। ১৭৬৬ সালের ২রা জানুয়ারি রামলোচন রায়কে রাজা উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তাকে দেওয়া হয় হীরা পান্না খচিত সিংহাসন সোনার রাজ মুকুট ১০ হাজার সৈন্য রাখার ক্ষমতা, ( মতান্তরে ৪০০০ সৈনিকের অধিনায়কত্ব ) রুপোর ঝালর দেওয়া পালকি এবং পথে বেরোনোর সময় কাড়া নাকাড়া বাদ্যের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

এছাড়াও বারটি হাতি ১০০ টি ঘোড়া ও ৪ ফুট ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ, তিন ইঞ্চি ব্যাস যুক্ত একটি কামান তিনি উপহার হিসেবে পান। সেই কামানটি এখনো আন্দুল রাজবাড়ির অন্নপূর্ণা মন্দির প্রাঙ্গণে শোভা পাচ্ছে।

তারপরের বছরই রামলোচন রায় সরস্বতী নদীর তীরে, রাজবাড়ির নিকটেই রয়েছে সরস্বতী নদী, যে নদী দিয়ে একসময় বড় বড় বাণিজ্য তরী চলাচল করতো, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের এক নির্ভরযোগ্য জলপথ ছিল, যা বর্তমানে একটি সরু নালায় পর্যবসিত হয়েছে, এই আজকের আন্দুলে এক রাজবাড়ী নির্মাণ করেছিলেন।

আন্দুল রাজবাড়ি

যেটি পুরনো রাজবাড়ি নামে পরিচিত, বর্তমানে খুবই জীর্ণ ও ভগ্নপ্রায় অবস্থা। এটি বর্তমান আন্দুল রাজবাড়ির পূর্বদিকে অবস্থিত।

আকারে প্রকারে এই বাড়ি একেবারে নিতান্তই ছোট। বাইরে থেকে চট করে বোঝাই যায় না যে এটা রাজবাড়ী। ভিতরে ঢুকলে কিছু স্থাপত্য নিদর্শন দেখলে বোঝা যায় এটা একদা রাজবাড়ী ছিল।

পলেস্তারা খসে গিয়ে ইট গুলো বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও ইট গুলো ভেঙ্গে গেছে। গোল গোল থাম এবং দেয়ালের ফাঁকফোকর দিকে বেরিয়েছে বড় বড় গাছ ও আগাছার জঙ্গল। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ কোন সৌন্দর্যই আজ আর অবশিষ্ট নেই।

তবে এই বাড়িতেও কিছু লোক বসবাস করেন। তাদের সঙ্গে মূল রাজবাড়ীর কি সম্পর্ক তা আমরা জানতে পারিনি। শুধু ভেতরে গিয়ে চোখের দেখাই দেখেছি মাত্র।

 

{ আরো পড়ুন – বাংলাদেশের ভূতুড়ে জায়গা

 

১৭৬৭ সালে তিনি এখানে আন্দুলাব্দ প্রচলন করেন। তিনি ১৭৮৭ সালে যখন মারা যান, ২৫ কোটি টাকার জমিদারি, ১৮৮ লক্ষ নগদ টাকা, ১২ কোটি টাকার সোনার গহনা, পাঁচ লক্ষ টাকার হীরার মুকুট, ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের হীরা পান্না মুক্তা খচিত সিংহাসন, ৮৫০ টি সোনার থালা এবং ৭৫০ টি রুপোর কলস পূর্ণ কয়েক কোটি টাকার মোহর, ১৩৮টি রূপোর বাসন ও প্রচুর হাতির দাঁতের আসবাবপত্র রেখে যান।

তার মৃত্যুর পর রাজা হন তাঁর পুত্র কাশীনাথ রায়।

( মতান্তরে রামলোচনের মৃত্যুর সময় তার পুত্র কাশীনাথের বয়স ছিল মাত্র এক বছর। ফলে নাবালক পুত্রের হয়ে তার মা রানী সখী সুন্দরী, তার পিতৃব্য পুত্র রাজ চন্দ্র রায়  ও শিব চন্দ্র রায় তার অভিভাবক নিযুক্ত হন। )

পরবর্তীকালে এই কাশীনাথ রায়ও প্রচুর ধনসম্পত্তি ও প্রভাব প্রতিপত্তির অধিকারী হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন শোভাবাজার রাজবাড়ির জামাই। ১৮১৫ সালে কাশীনাথ রায় যখন মারা যান।

তখন তার একমাত্র পুত্র রাজনারায়ণ রায়ের বয়স মাত্র চার বছর। ফলে জমিদারি দেখভালের দায়িত্ব চলে যায় কোর্ট অফ ওয়ার্ডসের হাতে। রাজনারায়ণ রায় সাবালক না হওয়া পর্যন্ত আন্দুল রাজবাড়ির সমস্ত রকম কাজ কর্ম পরিচালনা হতো কোর্ট অফ ওয়ার্ডসের মাধ্যমে।

রাজনারায়ণ রায় অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি হিন্দু কলেজ থেকে স্নাতক হন। বিভিন্ন ভাষায়, যেমন সংস্কৃত, উর্দু,পার্সি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠেন।

সাবালক হওয়ার পর তিনি আন্দুলের রাজ সিংহাসনে বসেন। প্রধানত তার সময় কালকেই আন্দুল রাজবাড়ির স্বর্ণযুগ বলা যেতে পারে। তিনি বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজে প্রচুর দান ধ্যান করেছিলেন।

তিনি ছিলেন হেনরী লুই ডিভিয়ান ডিরোজিওর মতাদর্শে অনুপ্রাণিত  “ইয়ং বেঙ্গল” এর একজন সক্রিয় সদস্য।

শোনা যায়, তিনি এক লক্ষ টাকা ব্যয় করে বিদগ্ধ পন্ডিতদের দ্বারা সংস্কৃত ভাষায় “কায়স্থ কৌস্তভ” রচনা করিয়ে, সমাজের গণ্যমান্য ও অভিজাত ব্যক্তিদের বিতরণ করেছিলেন। (মতান্তরে রাজা রাজনারায়ণ রায় নিজেই “কায়স্থ কৌস্থভ” নামে সংস্কৃত ভাষায় একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

এবং এই গ্রন্থে তিনি সর্বপ্রথম প্রমাণ করেছিলেন যে কায়স্থ জাতি ক্ষত্রিয় এবং তাদের উপবীত ধারনের অধিকার আছে) কথিত আছে, তিনি নিজে “আন্দুল রাজ প্রশস্তি” নামে এক কাব্য রচনা করেছিলেন।

সংগীতের প্রতিও তার অনুরাগ ছিল। তিনি দিল্লি লখনৌ ও গোয়ালিয়র থেকে নামী গায়কদের নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসতেন রাজবাড়ীতে সংগীত পরিবেশন করার জন্য।

তাঁর আমলে আন্দুলের রাজবাড়িতে যে সকল নিমন্ত্রিতরা আসতেন তাদেরকে মুসলিম  আদব কায়দায় পায়জামা, চাপকান, কাবা, কোমর বন্ধ ও পাগড়ী পড়তে হতো।

১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড অকল্যান্ড তাকে রাজা বাহাদুর উপাধি প্রদান করেন। এবং তাকে সম্মানসূচক এক প্রস্থ মূল্যবান পোশাক-পরিচ্ছদ, রত্ন খচিত একটি তরবারি ও একটি ছুরি প্রদান করেছিলেন।

১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের ৪৬ সংখ্যক কলকাতা গেজেটে এই মর্মে একটি ঘোষণা প্রকাশিত হয়েছিল।

তিনি নিজেই গ্রিক স্থাপত্যের অনুকরণে, নকশা তৈরি করে আজকের এই তথাকথিত আন্দুল রাজপ্রাসাদটি, যা আনন্দধাম নামে পরিচিত, তখনকার দিনে তিন কোটি টাকা খরচ করে,তৈরি করেন ( ১৮৩০-১৮৩৪ সালে )

প্রায় ৬০ ফুটেরও বেশি উঁচু তিন তলা রাজপ্রাসাদটির সামনের দিকে ডোরিক স্থাপত্যের অনুকরণে আটটি গোল স্তম্ভ ও দুপাশের দুটি গোল স্তম্ভ, মোট দশটি উঁচু স্তম্ভ রয়েছে।

যে স্তম্ভ গুলি মেঝের উপর দাঁড়িয়ে তিন তলার উচু সিলিং টাকে ধরে রেখেছে। এই গোল স্তম্ভ গুলির বেড় এতটাই বড় যে, দুজন  দুদিকে দুহাত বাড়িয়ে দাঁড়ালেও একে অপরের আঙ্গুল ছুঁতে পারবে না।

এইরকম উঁচু গোল স্তম্ভ বাংলার অন্যান্য রাজবাড়ীতে প্রায় দেখাই যায় না। ভূমি থেকে কয়েক ধাপ লম্বা টানা সিঁড়ি পেরিয়ে তবে রাজবাড়ির সামনে চাতালে ওঠা যায়।

রাজপ্রাসাদটি গ্রীক স্থাপত্যের অনুকরণে তৈরি হলেও, রাজবাড়ীর প্রবেশপথের তোরণ দ্বারটি কিন্তু রোমান স্থাপত্যের অনুকরণ তৈরি। আন্দুলের রাজপ্রাসাদের ভেতরে নাচ ঘরে ১৬ টি উঁচু স্তম্ভ ছিল।

আন্দুল রাজবাড়ি

আর তার মাঝখানে ঝোলানো থাকত ৮২/৮৪ খানা ঝাড়বাতি। দেয়ালে টাঙানো ছিল দেশি-বিদেশি তৈলচিত্র। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গীতজ্ঞ ও বাঈজীদের আমন্ত্রন জানানো হতো এই রাজবাড়ীর নাচ ঘরে অনুষ্ঠান পরিবেশন করার জন্য।

এই নাচ ঘরে উচ্চাঙ্গ সংগীত শোনার জন্য ও নাচ দেখার জন্য তদানীন্তন বহু রাজা মহারাজারা এবং সম্ভ্রান্ত ও অভিজাত সম্প্রদায়ের দেশী ও বিদেশী অতিথিরা এখানে আসতেন।

সংগীত চর্চার পাশাপাশি বিদ্যা চর্চার প্রতিও তার যথেষ্ট অনুরাগ ছিল। তিনি মিথিলা ও বারানসী থেকে কয়েকজন বিশিষ্ট পন্ডিতকে তার রাজসভার সভা পন্ডিত হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন।

সেই সময় আন্দুল সংস্কৃত চর্চার জন্য প্রসিদ্ধ লাভ করেছিল। তখন আন্দুলকে বিদগ্ধ জন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষেরা “দক্ষিণবঙ্গের নবদ্বীপ” বলে অভিহিত করেছিলেন। এই সমস্ত পন্ডিত ব্যক্তিরা রাজা রাজনারায়ণের কাছ থেকে নিয়মিত বৃত্তি পেতেন।

রাজা রাজনারায়ণ রায় ছিলেন তার পূর্বসূরীদের মতন ইংরেজ অনুগত ও ব্রিটিশ রাজ ভক্ত।

১৮৩৫ সালের লর্ড অকল্যান্ড সাহেব তাকে রাজা বাহাদুর উপাধি প্রদান করেন।

তিনি রাজপ্রাসাদের নিকটেই অন্নপূর্ণা মন্দির নির্মাণ করে ভূকাশি নামক ভবনে অষ্টধাতুর অন্নপূর্ণা মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন ও চতুর্দশ শিবের মন্দির নির্মাণ করেন।

তবে সেই পুরনো মূর্তি চুরি হয়ে যাওয়ায় এখন পাথরের মূর্তি পূজিত হয়। তার পাশাপাশি রাজপ্রাসাদের পূর্বদিকে দুর্গা মন্দির নির্মাণ করে দুর্গা পুজোর প্রচলন করেন।

যদিও আন্দুল রাজবাড়িতে দুর্গাপুজো তার আগেই শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সেটা হতো পুরনো রাজবাড়িতে।

রাজা রাজনারায়ণ রায় নতুনভাবে দুর্গা মন্দির নির্মাণ করে সেখানে জাঁকজমক সহকারে পুজো শুরু করেছিলেন।

আড়ম্বর ও আভিজাত্যপূর্ণ যে দূর্গা পূজার সূচনা করেছিলেন রামলোচন রায়, রাজা রাজনারায়ন রায় সেই দুর্গাপুজোয় এক নতুন যুগের সূচনা করলেন।

আন্দুল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো, সারা বাংলার বনেদী বাড়ির দুর্গাপূজার মধ্যে আজও এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। তাই আন্দুল রাজবাড়ির ইতিহাস বলতে গেলে, আন্দুল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো নিয়ে দু চার কথা না বললেই নয়।

প্রতিবছর উল্টো রথের দিন মায়ের মূর্তির কাঠামো তৈরীর মাধ্যমে দুর্গাপুজোর সূচনা হয়।

সে সময় ৮ মন মাটি দিয়ে মায়ের মূর্তি তৈরি হতো। এবং প্রতিমাটি হতো একচালার। মায়ের গায়ের রং হলুদ বর্ণের। এবং সিংহ হচ্ছে ঘোড়া মুখো, গায়ের রং সাদা।

নবমী তিথির পনেরো দিন আগে থেকে মহা ষষ্ঠী পর্যন্ত প্রতিদিন সকালবেলা চণ্ডীপাঠ করা হতো। বংশের ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে  আজও সেই সব ধারা বা রীতি অব্যাহত রয়েছে।

আগে দুর্গাপূজার বোধনের দিন ছাগ বলি হতো এবং কামানের তোপ দাগা হতো। সন্ধীপূজার সময় ১০৮ টি প্রদীপ জ্বালানো হত। মাকে কোনদিনই অন্নভোগ দেওয়া হতো না পুজোর সময়। নানা রকম ফল, নাড়ু ও নারকেল দিয়ে মাকে ভোগ নিবেদন করা হতো।

এখনো সেইসব প্রথা যতটা সম্ভব অক্ষুন্ন রাখা রয়েছে। কারণ আন্দুল রাজবাড়ির সেই আর্থিক স্বচ্ছলতা আর প্রতিপত্তি আজ বিলুপ্ত। তাই এই পুজো অতীতের জৌলুষ হারালেও ঐতিহ্য, আভিজাত্য, বনেদিয়ানা ও গরিমায় আজও ভাস্বর হয়ে আছে।

সে সময় দুর্গাপূজো কতটা জমকালো ছিল তা এই পুজোয় যারা আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন তাদের নামগুলো শুনলেই বুঝতে পারবেন। পুজোতে বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত ছিলেন লর্ড ক্লাইভ, ওয়ারেন হেস্টিংস, লর্ড বেন্টিঙ্ক, লর্ড ডালহৌসি,

শোভাবাজারের মহারাজা নবকৃষ্ণ দেব, খিদিরপুরের ভূ কৈলাশের রাজা জয় নারায়ণ ঘোষাল, কাশিমবাজারের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী, পটলডাঙ্গার বসুমল্লিক পরিবার, পাথুরিয়া ঘাটার রাজা রাজেন মল্লিক, বাগবাজারের বিখ্যাত বসু পরিবারের পশুপতি বসু, তদানীন্তন বিখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার কৈলাস চন্দ্র বসু এবং আরো অনেক গণ্যমান্য, সম্ভ্রান্ত ও অভিজাত ব্যক্তিসমূহ।

তাদের আপ্যায়ন ও মনোরঞ্জনের জন্য অঢেল খানাপিনা ও নাচ ঘরে বাঈজি নাচের আসর বসতো।

সেই সময়কার অনেক নামিদামি বাঈজি আমন্ত্রণ পেতেন এই বাড়িতে নাচের আসরে। তারাও রাজবাড়ীর আমন্ত্রণ পেলে নিজেদেরকে ধন্য মনে করতেন।

শুধু সম্ভ্রান্ত ও অভিজাত ব্যক্তিরাই শুধু নন স্থানীয় সাধারণ মানুষদের জন্যও পুজোর সময় এই বাড়ির দ্বার ছিল অবারিত। তাদের ভুরিভোজোরও ব্যবস্থা থাকত।

শোনা যায় রাজবাড়ীতে পুজোর তিনদিন পাঁচ হাজার মানুষের মধ্যাহ্ন ভোজের ব্যবস্থা থাকত। এবারও জানতে পারলাম গত বছর পূজোতে ও প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ মায়ের ভোগপ্রসাদ পেয়েছেন।

সেই সময় ব্রাহ্মণরা ভোজনের সাথে পেতেন যথোচিত ভোজন দক্ষিণা।

দূর্গাপুজার পুরনো রীতিনীতি আজ অনেকটাই বিলুপ্ত। তবুও তারই মধ্যে অষ্টমীর রাতে রাজবাড়ির সদস্যরা ধুনুচি নাচে মেতে ওঠেন। দশমীর দিন সকালবেলা ঘট বিসর্জন হয়।

বিকেলবেলা রাজবাড়ির মূল ফটক বন্ধ করে রাজবাড়ির মেয়ে বউরা মাকে বরণ করেন, নিজেদের মধ্যে সিঁদুর খেলা খেলেন। রাজবাড়ীর মেয়ে বউদের বরণ করা শেষ হলে মূল দরজা খুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষদের জন্য। যাতে তারা মাকে বরণ করার সুযোগ পান।

আগে বিসর্জনের সময় তোপ দাগা হতো। সেই তোপধ্বনি শুনে আন্দুল এবং তার আশেপাশে মানুষরা বুঝতে পারতেন যে রাজবাড়ীর প্রতিমা বিসর্জিত হলো।

রাজবাড়ীর প্রতিমা বিসর্জনের পর আশেপাশের অন্যান্য দুর্গাপুজোর প্রতিমার বিসর্জন হত। তবে এখন আর তোপ দাগা হয় না।

রাজবাড়ীর প্রতিমা বিসর্জনের পর রাজ পরিবারের সদস্যরা রাজবাড়ীতে ফিরে এসে অপরাজিতা পুজো করতেন। তারপর শুরু হতো  প্রণাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় পালা।

এছাড়া অন্নপূর্না পূজোর সময় সারারাত ধরে কৃষ্ণ লীলার অভিনয় ও যাত্রা পালা অনুষ্ঠিত হতো।

১৮৩৬ সালের ১০ই ডিসেম্বর তার পুত্র বিজয় কেশবের অন্নপ্রাশনে আশেপাশের সমস্ত অঞ্চলের মানুষদের ভুরিভোজ করানো ছাড়াও বিরাট দানযজ্ঞ অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেদিনের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লর্ড বেন্টিঙ্ক সাহেব।

রাজা রাজনারায়ণ রায় প্রয়াত হন ১৮৪৯ সালে। তাঁর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং লর্ড ডালহৌসী।

১৮৪৯ সালে বিজয় কেশব রায় মাত্র ১৩ বছর বয়সে আন্দুলের রাজ সিংহাসনে বসেন। বিজয় কেশব রায় নাবালক হওয়ার জন্য তার মা রানী মহোদয়া এবং ক্ষেত্র কৃষ্ণের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা প্রাণ কৃষ্ণ মিত্র নাবালক রাজার অভিভাবক হিসেবে রাজকার্য দেখাশোনা করতেন।

কিন্তু রাজ সিংহাসনের প্রতি কেশব রায়ের তেমন কোন মোহ ছিল না। শোনা যায়, তিনি তন্ত্র সাধনা নিয়ে মেতে থাকতেন। দিনের বেশিরভাগ সময় তিনি পঞ্চমুণ্ডীর আসনে তন্ত্র সাধনা করতেন।

১৮৮৪ সালে বিজয় কেশব অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে তার বিধবা দুই পত্নী রানী নবদুর্গা ও দুর্গা সুন্দরী দুজনেই আলাদা আলাদাভাবে দুইজনকে দত্তক সন্তান গ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ।

বিশ্বনাথ দত্ত তার দুই পুত্র নরেন্দ্রনাথ ও মহেন্দ্রনাথ কে রাজ পরিবারের দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদনও করেন।

এখানে উল্লেখ্য, এই নরেন্দ্রনাথকেই পরবর্তীকালে সারা বিশ্ব স্বামী বিবেকানন্দ হিসেবে চিনেছিল। যাইহোক সেই দত্তক গ্রহণের আবেদন নানা মামলা মোকদ্দমায় নাকচ হয়ে যায়।

কারণ দুই দত্তক সন্তান গ্রহণ “হিন্দু ব্যবহার শাস্ত্র” বিরুদ্ধ কাজ। সে সময় মিস্টার জে সি ম্যাগ্রেনর জমিদারির রিসিভার নিযুক্ত হন।

মামলা প্রিভি কাউন্সিল অবধি পৌঁছেছিল। প্রিভি কাউন্সিলের বিচারপতি দুই দত্তক পুত্রকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেন। ফলে আন্দুলের রাজ সিংহাসনে বসেন রাজা কাশীনাথের দৌহিত্র ক্ষেত্র কৃষ্ণ মিত্র।

আন্দুল রাজ পরিবারে রায়দের শাসন শেষ হয়ে শুরু হয় মিত্র পরিবারের শাসন।

এই মামলার ফলে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছিল। ফলে আন্দুল রাজ পরিবারের কোষাগার প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছিল। সেজন্য রাজা ক্ষেত্র কৃষ্ণ মিত্র অপচয় বন্ধ করে জমিদারি আয় বৃদ্ধির দিকে নজর দেন।

রাজা ক্ষেত্র কৃষ্ণ পরোপকারী ও সমাজ কল্যাণমূলক কাজে প্রচুর দান ধ্যান করতেন বলে বাংলার প্রাক্তন ছোটলাট স্যার আলেকজান্ডার মেকেঞ্জী ভারত সম্রাজ্ঞীর নামে তাকে একটি প্রশংসা পত্র দিয়েছিলেন।

১৯০৭ সালে রাজা ক্ষেত্র কৃষ্ণের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি একটি উইল করে যান। উইলে লেখা ছিল, তার বড় ছেলে পাবে সম্পত্তির দশ আনা এবং ছোট ছেলে পাবে ছয় আনা। কিন্তু তাই নিয়ে মামলা শুরু হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় দুই ছেলেই সমান অংশীদারিত্ব পাবে।

এইভাবে আন্দুল রাজ পরিবার দুই তরফে বিভক্ত হয়ে যায়। বড় তরফ ও ছোট তরফ।

এখনো সেই নিয়মই চলছে। বর্তমানে রাজপ্রাসাদে বসবাস করেন মিত্র পরিবারের দুই তরফের উত্তরসূরিরা। আজও রাজবাড়ীর দুই অংশে দুই তরফের কয়েকজন মানুষ বসবাস করেন।

আমরা আন্দুল রাজবাড়িতে পৌঁছে ছোট তরফের এক উত্তরসূরীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমর্থ হই।

তার নির্দেশে একটি স্থানীয় ছেলে আমাদের রাজবাড়ির ভেতরে ঢুকতে সাহায্য করে। তবে ছোট তরফের দিকটায় দোতলায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু আছে। যেটুকু দেখেছি যেটুকু বুঝেছি, নিচের তলার ঘর গুলি বসবাসের অযোগ্য। তবে এই বাড়ির অন্দরমহল এতটাই গোলকধাঁধা যে ভেতরে ঢুকলে কুল কিনারা পাওয়া মুশকিল। বাড়িটির অন্দরমহলের অবস্থা অত্যন্ত জরাজীর্ণ।

বাড়ির মাঝে যে ছোট ছোট উঠোন ( কোর্ট ইয়ার্ড ) মতন আছে সেগুলো পুরো জঞ্জালে ভর্তি। তবুও সেই আগেকার চোখ ধাঁধানো স্থাপত্য দেখলে বিস্মিত হতে হয় মুগ্ধ হতে হয়, যা আজ বিবর্ণ, জীর্ন, ভগ্নপ্রায়। বাড়ির ভেতরে ইট দিয়ে বাধানো গোলাকৃতি সিঁড়ি ধাপে ধাপে একতলা থেকে তিনতলায় উঠে গেছে।

বেশিরভাগ জায়গাই অন্ধকার। মোবাইলের আলো জ্বেলে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয়েছে। সেই সিঁড়ি দিয়ে উঠে একটা ছোট্ট ছাদ নতুন জায়গায় পৌঁছেছিলাম।

যেখান থেকে বাড়ির পিছন দিকের খানিকটা অংশ নজরে এলো। সেখানকার অবস্থাও অত্যন্ত জরাজীর্ণ। নিচে আগাছার জঙ্গল হয়ে আছে। সেখানো হয়তো বিষাক্ত সাপেরা নিরাপদে বসবাস করছে।

আমরা তিনতলায় যে ছোট তরফের এক উত্তরসুরির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছিলাম, সেদিককার সিঁড়িগুলো খুব চওড়া এবং অনেকটা জায়গা নিয়ে। প্রথম দুটো তলার সিঁড়ি গুলো ইট দিয়ে বাধানো।

দোতলা থেকে তিনতলায় ওঠার সিঁড়ি কাঠের। সব কটা সিঁডির ধাপই বেশি লম্বা। একসাথে অনেকগুলো মানুষ উঠতে পারেন। তারা যেদিকটায় বসবাস করেন।

সেই দিকটা হলো রাজপ্রাসাদের সামনের দিকটা। তিনি বললেন আমরা যেখানে বাস করছি সেটা আগেকার দিনের অলিন্দ। সেই সময় এখানে কেউ থাকত না। অতিথি অভ্যাগতরা এলে এই অলিন্দে বসেই গল্প গুজব আড্ডা হত। বসবাসের ঘরগুলো ছিল অন্দরমহলে।

যেগুলো আজ বসবাসের অযোগ্য। তাই তারা এই অলিন্দকেই নিজেদের বাসযোগ্য করে নিয়েছেন।

বাড়ির সামনে একতলায় একটি স্থানীয় ক্লাব ঘর রয়েছে। আর বাড়ির ডান হাতে সামনের দিকে একটি তিন তলা ছোট বাড়ি দেখতে পেলাম। যেটা খুবই বিসদৃশ লাগছিল। সামনে বিশাল উন্মুক্ত মাঠে যে যার মতন করে দল করে খেলাধুলা করছে।

আন্দুল রাজবাড়ি

রবিবার বলে লোকের সমাগম একটু বেশি হয়েছে। বেশিরভাগই কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়ে। বুঝতে পারলাম এখানে অনেকেই আড্ডা মারতে বা গল্প করতে আসেন।

আমাদের রাজ বাড়ির নাচ ঘরটা দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সেই সাধ অপূর্ণই থেকে গেছে। তবে প্রতিশ্রুতি পেয়েছি আগে থেকে জানিয়ে এলে এই নাচ ঘর টাও দেখতে পাবো আগামী দিনে।

দুর্গা দালানের প্রবেশপথটিও তালা বন্ধ থাকায় ভেতরে ঢোকার সুযোগ পাইনি। বাইরে থেকে গেটের উপর দিয়ে ছবি নেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে খুব আন্তরিকভাবেই পুজোর সময় আসতে বললেন।

তখন উনি চেষ্টা করবেন আরো কিছু দেখানোর জন্য। জানিনা পুজোর সময় যাওয়া হবে কিনা। দেখাই যাক।

আজ সেই রাজাও নেই আর রাজত্বও নেই, তবুও ভগ্ন, জীর্ন ও বিবর্ন বিশাল রাজপ্রাসাদ, রাজবাড়ীর এক সময়কার উজ্জ্বল ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে আজও  দাঁড়িয়ে আছে বিশাল এক মাঠের উত্তর দিকে।

দক্ষিণ দিকের উঁচু তোরণদ্বারটি সব সময় বন্ধই থাকে। তাই অন্নপূর্ণা মন্দিরের সামনের রাস্তা দিয়ে এই মাঠে বা এই রাজবাড়ীতে ঢুকতে হয়।

রাজবাড়ি দেখার পর অন্নপূর্ণা মন্দির দর্শনে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে বিবরণ দেব পরবর্তী পোস্টে।

 

তথ্য ঋণ: –

১) বাংলার রাজবাড়ীর ইতিহাস – সঞ্চিতা পাল।

২) রাজাই শুধু নেই – তৃণা ঘোষাল ও উজ্জ্বল ঘোষ।

৩) কবিতা কুটির, বাংলার প্রাচীন রাজবাড়ীর দুর্গাপূজা, পূজা বার্ষিকী ১৪৩০।

৪) শতাব্দি প্রাচীন বনেদী বাড়ির পুজোর ইতিহাস – ভ্রমণপিপাসু প্রকাশনী।

৫) রাজবাড়ীর ইতিহাস – ভ্রমণপিপাসু প্রকাশনী