জীন ও রিক্সাওয়ালা মামা
লেখিকাঃ শেখ_প্রীতি
জীন-পরীতে অনেকেই বিশ্বাসী না, কিন্তু আমাদের ইসলাম ধর্মে এদের কথা বলা হয়েছে, তাই এটা অবিশ্বাস এর কোনো জায়গা নেই।
আমার সাথে ও এরকম অলৌকিক ঘটনা বহুবার ঘটেছে। আমার নাম সাফিক ইসলাম । পড়াশোনার জন্য ময়মনসিংহ এ থাকি। মেসে থাকতে ভালো লাগে না ব’লেই দুই রুম এর বাসা নেই, পুলিশ লাইন এর এইখানে। জায়গাটা বরাবরই মানুষে পরিপূর্ণ।
আর আমার কলেজের মোটামুটি কাছে ও।আমি যে বাসাটা নেই সেই বাসাটা পাঁচতালা ছিলো। আমার আম্মু ও বেশিরভাগ সময়ে আমার বাসায়ই থাকতো। তো মূল ঘটনায় আসি।
একদিন কলেজ, প্রাইভেট শেষ করে সন্ধা ৭ টার দিকে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দেই। একটা. লেখিকা শেখ প্রীতি রিক্সা নিয়ে নেই।
কিন্তু রিক্সাওয়ালা মামাটা ছিলো বড় অদ্ভুত। অদ্ভুত বলার কারণ কি জানেন???
আমি নতুন বাজার থেকে রিক্সাটা নেই। যখন রিক্সাওয়ালা মামা কে জিজ্ঞেস করলাম পুলিশ লাইন এ যাবেন?
তখন তিনি বললেন, পুলিশদের আমি বাপু বড় ঘৃণণা করি, কিন্তু আফনি যখন বলছেন তাইলে যামো। আমি আর কিছু না ভেবে উঠেই পরলাম। উঠার পর আমার শরীর কেন জানি একটু অসুস্থ ভাব লাগছিলো,মাথাটাও ঘুরছিলো,শরীর দিয়ে ঘাম ও পরছিলো।
রিক্সাওয়ালা মামা বলল, বাবা আফনি কিন্তু ভালা মানুষ, তাই আফনাকে আমি একটা কথা কই, কিছু মনে কইরেন না!
আচ্ছা বলেন মামা!
আফনার সাথে কি কখনো অদ্ভুত কিছু ঘটছে!! মানে জীন- পরী তে বিশ্বাস করেন বাবা????
আমি বললাম করি, কিন্তু কখনো কিছু দেখি নি। আগেই বলে রাখি আমি রিক্সায় সন্ধায় ৭ টার সময় উঠি। আমার বাসায় আসতে বড় জোর ২০/২৫ মিনিট লাগার কথা, যদি ভীড় না থাকে। রিক্সাওয়ালা মামা আবার বলতে শুরু করলো আফনারে একটা ঘটনা কই শুনবেন?????
আমি বলি, বলেন মামা…
তাহলে হুনেন,,,একদিন রাইতে আমি বাড়ির দিকে যামো বইলা রিক্সা ঘুরাইলাম, তখন মনে হয় রাইত এগারো / বারোটা বাজে, দেখলাম একটা মধ্যবয়ষ্ক লোক হুজুরের মতো রাস্তায় দাঁড়াইয়া আছে।
আমাকে দেইকখা কইলো জেলখানা মোড়ে যাবেন??
বিশ্বাস করবা কিনা বাবা জানি না আমি, ওনার শরীর থেইকা কি যে সুন্দর সুগন্ধি বার হয়তাছিলো, আমার মনে হয়তাছিলো আমি এই দুনিয়ায় নাই। পরে ওনারে আমি রিক্সায় উঠালাম, চালানো শুরু করলাম,,,,
যখন পুলিশ লাইন এ আইলাম দেখলাম একটা পুলিশ আমার রিক্সা থামাতে কইছে।
আমি ও থামাইলাম। তখন পুলিশ টা কই, চাচা আপনি আমাকে ওই যে কাঠগোলা বাজারে নিয়ে যাবেন?
আমি কই আমার রিক্সায় তো এক হুজুর বইয়া আছে, আফনারে নিমো কেমনে??? পুলিশাটা কই, আপনার রিক্সায় কেউ নাই নিজেই চেয়ে দেখেন। আপনি রাতে উল্টা পাল্টা কিছু খাইছেন????।
আমি পিছে চাইয়া দেহি কেউ নাই। আমি তখন কোনো মতে বাড়িত যাই। বাড়িতে যাইয়া বউ রে সব কই,,
বউ আমাকে কই তুমি ডরাইয়ো না, আল্লাহ আছে।। তোমার কিচ্ছু হইতো না।আমি সেদিন অনেক ডরাইছিলাম। ডরের কারণে আমার জ্বর ও আইয়া পরলো।
আমি রাইতে দেহি আমার ঘরে, ওই হুজুর আমারে কই তুই পিছে চাইছিলি কে??? পুলিশ এর কথা শুনছোস কেন??
তোর ভালো করতে চাইলাম উল্টা খারাপ বানালি তুই। এখন এটার শাস্তি তুই পাবিই।
আমি কই, মাফ চাইছি, আমি আর ভুল করুম না।। কিন্তু আফনি কেডা??
তিনি কইলেন, আমি জীন ছিলাম, তোর ভালোর জন্য আসছিলাম তুই গরীব ছিলি তাই, আবার ভালো মানুষ ছিলি। কিন্তু তুই যে কাজটা করলি এর ফলে তোর মৃত্যু ছাড়া আর কিছু হবে না।
আমি অনেক আকুতি মিনুতি করি, কিন্তু সেদিন রাইতেই আমার মৃত্যু ঘটে।
হাহা,,….
এইসব শুনে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিলো। আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাত দশটা বাজে। কিন্তু কিভাবে সম্ভব??? আমার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে।
আবার ওনি বলতে শুরু করলেন, বাবা ডরাইয়ো না তোমার বিপদ হইতো না,,, হাহা,
তোমারে যদি পারতাম তাইলে আগেই মাইরা ফেলতাম, কিন্তু তোমার গলায় আল্লাহ বরকত লকেট আছে। এটা আল্লাহর নামে। আমি ওইসবের কাছে যাইতারমু না।হাহা,
তাই তুমি আইজ বাঁইচা গেলা যাও রিক্সা তে নামো, তোমার বাসার সামনেই আইয়া পরছি। ভালা থাইকো, আর পিছে ফিরে চাইয়ো না।
আমিও ভয়ে পিছনে না তাকিয়ে দৌড়ে বাসায় ডুকলাম। আম্মু কে সব জানালাম,আম্মু আমাকে তখন বললেন গরম পানি দিয়ে গোসল করে নামাজ আদায় কর,,,আর রাতে মাছ খাবি না।
আল্লাহ বাঁচালো তোরে আজ।
আমি একটা কথা বলে রাখি যারা আল্লাহ বরকত লকেট ব্যবহার করেছে তারা জানে এটা অনেক কাজের। আমি নিজেও এটা ব্যবহার করি। তাই কেউ অযথা ভালো জিনিস নিয়ে উল্টা পাল্টা বলবেন না। কারণ এতে সম্পূর্ণ আয়তুল কুরসী আর আল্লাহ নাম লিখা আছে।
কিন্তু আমি আজও বুঝলাম না,, আমি সন্ধা ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত এতো ঘন্টা রিক্সায় কিভাবে কাটালাম তবুও এতো কম দূরের রাস্তায়?? টের ও পেলাম না।
আরো অনেক ভৌতিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি আমি, আরেকদিন বলবো নে।
{ আরো পড়ুন – আত্মার প্রতিশোধ – ভয়ানক এক আত্মার গল্প
( জীন ও রিক্সাওয়ালা মামা – ভয়ানক সত্য ঘটনা আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী পর্বের জন্য আমাদের সাথেই থাকুন । ধন্যবাদ।)
Leave a Reply