জ্বীনের কবল থেকে আমিনুলের বেরিয়ে আসার সত্যি ঘটনা

প্রথম পর্ব

 

জ্বীনের কবল-

ঘটনাটা আসলে ১ দিনের না।আজ পর্যন্ত চলমান,অনেক ব্যাতিক্রমধর্মী আর ভয়ংকর। আজ ঘটনার সূত্রপাত শেয়ার করব।

১৪ নভেম্বর,২০১৯,সেদিন সন্ধ্যায় আমার আর আমার ছোট ভাই এর খুব ঝগড়া হয়।ও ক্লাস ১০ এ এবার। যাই হোক,আমাদের ঝগড়া বা মারামারি যেমন বেশি হয় তেমনি খুব দ্রুতই মিশে যাই।কিন্তু সেদিনকার ঘটনা একটু অন্য রকম! আমার ভাই যেন একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছিল।ঘটনার  এক পর্যায়ে ওকে আমি ধমক দেই(দাবড়)। ও তখন বাসার সামনের বাগান দিয়ে দৌড় দেয়(সময় রাত ৭-৭ঃ৩০)। পরে আমি আর আম্মু ওকে খুজতে বের হই।২০-২৫ মিনিট পর ও বাসায় আসে।দেখে বুঝেছিলাম ও হয়ত পড়ে যেয়ে হাটুতে ব্যাথা পেয়েছে।

কেটেও গেছে, পরের দিন সকালে আমার ছোট ভাই বলে যে ও যেখানে বেধে পড়ে গেছিল সেখানে বেধে যাবার মত কিছুই নেই,অর্থাৎ ফাকা একটা জায়গা।অথচ ওর হাটু কেটেও গেছে।

ও আরো বলল যে ও নাকি পড়ে যাবার পরেও ১৫ মিনিট এর মত জায়গা থেকে নড়তে পারেনি।তারপর উঠে বাসায় আসছে।আমি আর আম্মু প্রথমে বিশ্বাস করিনি।কিন্তু ওর কথা শুনে সেখানে গেলাম।সত্যিইতো! বাগানের ওই জায়গায় (ওইটা মূলত রাস্তার মতো) বেধে যাবার মত কিছু নেই।সুপারি গাছ আছে ৫-৬ হাত দূরে।কিন্তু আমিনুর এর হাটুতে বাড়িটা লেগেছে আর কেটেও গেছে।আম্মু বলল রাতের বেলা এই বাগান দিয়ে দৌড় দেওয়া একদমই ঠিক হয়নি।

২২ নভেম্বর, ২০১৯।আমার পরের দিন আইসিটি টেস্ট এক্সাম ছিল।তো ওইদিন রাতে ঘটল আসল ঘটনা।আমরা ২ ভাই একসাথে পড়তে বসলে খুব গল্প করি তাই আম্মু আমাকে টিভি এর রুমে আর আমিনুর কে পড়ার রুমে পড়তে বলল।তো পড়ার এক পর্যায়ে হটাত পড়ার রুম থেকে আমিনুর একটা চাবির রিং ছুড়ে মারল।আমি ভাবলাম ওর রিং ও মেরেছে হয়ত।আমি একটা ডাক দিলাম।কোনো সাড়া শব্দ নেই।একটু পর পড়ার রুম থেকে ২ টা বই ছুড়ে মারল তখন আমি উঠে গেলাম ওই রুম এ।

যেয়ে দেখি আমিনুর টেবিলের উপর মাথা  রেখে মুখ একদিকে রেখে বেহুশ এর মত গোংগাচ্ছে ।

আমি কল্পনাও করতে পারিনি যে খুব বাজে কিছু একটা শুরু হতে যাচ্ছে আমাদের সাথে।আমিনুর কে ডাক দিয়ে ওকে টেবিল থেকে তুলতে গিয়েই দেখি ওর হাতে আচড় এর দাগ! ৩ টা! রক্ত পড়ছে। আমার মাথায়ই আসছে না কিভাবে  হলো! এই দিকে আমিনুর ও কোনো কথা বলছে না।প্রথমে ভাবলাম ও হয়ত নিজেই নিজের হাত কেটেছে (হয়ত প্রেমঘটিত)। পরক্ষনেই ভাবলাম কাটলে এমন হয় না! এটা নখের আচড়।বিড়াল এর কথা একটুও ভাবিনি কারন বিড়াল এর আচড় আমি খুব ভালভাবেই চিনি।(আমার আছে)।

আমিনুর এর হাতের নখ তো মারাত্মক রকমের ছোট কারন ওর নখ কাটার অভ্যাস আছে।এসব আমার মাথায় মাত্র ৫-১০ সেকেন্ড এর জন্য আসে।আমার দরকার আমার ভাইকে জ্ঞান ফেরানো।দৌড়ে আম্মুর রুমে গিয়ে আম্মুকে ঘুম থেকে তুলে ডেকে নিয়ে আসি।

বলি ওকে আয়তুল কুরসি পড়ে ফু দাও।তখন ও একটু স্বাভাবিক হয়।আর আমি আর আম্মু ওর হাত পানি দিয়ে পরিষ্কার করে দেই।তারপর ওকে জিজ্ঞেস করি কে করেছে এই কাজ? ওর উত্তর শুনে আমরা ২ জনেই আকাশ ভেংগে পড়লাম।আম্মু নাকি ওর হাতে আচড় দিয়েছে! আমিনুর প্রচন্ড রাগ আর ভয় মিশ্রিত মুখেই আম্মুকে ইশারা করে দেখায় যে আম্মু করেছে! আব্বুকে ফোন দিলে আব্বু এসে ওকে ঝাড় ফুক করে দেয়।জমজমের পানি খাওয়াই।তারপর ও সুস্থ হয়।তখন নিজের মুখে বলে কি হয়েছিল তখন।

ও যেটা বলে তার সারসংক্ষেপঃ

আমিনুর পড়তে বসার ৫-১০ মিনিট পর(রাত ৮ঃ২০) হটাত সামনের  জানালার দিকে তাকালে দেখে যে কেউ একজন বাগানের সামনের আমলকী তলা থেকে হেটে আসছে।ভালভাবে খেয়াল করে দেখে যে সেটা আম্মু।আমিনুর আরো খেয়াল করে যে ওই জিনিসটার হাত অনেক ছোট বাচ্চাদের মত।কিছুক্ষন আগে আমিনুর পানি খেতে আসার সময় দেখে গেছে যে আম্মু রুমে ঘুম।ঠিক তার ৫-১০ মিনিট পরে তো আম্মুর ওখানে থাকার কথা না।আবার দরজাও বন্ধ,আম্মুর বাইরে যেতে হলে পড়ার রুম এর পাশ দিয়ে গিয়ে গেট খুলে বাইরে যেতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতে আম্মুর মত দেখতে ওই মহিলা একদম জানালার সামনে চলে আসে।আমিনুর  তখন ওইরকম পাখির মত হাত দেখে পুরো নিশ্চিত এটা আম্মু হতেই পারে না,খারাপ কিছু।

ওই মহিলা বলে “বাইরে আয়”।আমিনুর চাচ্ছিল যে রুম থেকে দৌড়ে চলে আসুতে আমার কাছে কিন্তু পারছিল না।আমিনুর বলল “না,আমি পড়ছি”।ওই মহিলা আবার বলল “আসতে বললাম না?

আমিনুর আবারো না করল।এবার ওই মহিলা জানালা থেকে সরে গেল যেন ঘরের মধ্যে ঢুকে যাবে।সত্যি সত্যি আমাদের দরজা বন্ধ থাকাতেও সে ভিতরে চলে আসল আর পড়ার রুমে ঢুকে গেল।সেই সময় আমিনুর আমাকে অনেক বার জোরে জোরে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে “ভাইয়া দেখ তো এই মহিলাটা কে?ঘরে ঢুকে গেল”।কিন্তু আমি নাকি খুব জোরে জোরে কার সাথে ঝগড়া করছিলাম।ততখনে মহিলাটা আমিনুর এর ঠিক সামনে বিছানায় বসে টেবিলের উপর ২ হাত রাখল।আমিনুর তখনও স্বাভাবিক ছিল মানে বোঝার জ্ঞান ছিল।

ও বুঝতে পারছিল যে ওর কথা কেউ শুনতে পারছে না।তাই হাতের আংগুলে যে চাবির রিং ঘোরাচ্ছিল সেটা পড়ার রুম থেকে বারান্দার দিকে চেলে মারল।(যেটা আমি শুনেছিলাম তবে রেস্পন্স করিনি)।

আর এই সব কিছু হচ্ছিল হয়ত ১-২ মিনিট এর মধ্যে।আমিনুর যখন মহিলার দিকে ভাল করে তাকাল দেখল চোখ ২ টা রাগে লাল হয়ে আছে। মহিলাটা বলল ” ওই রুম এ চল,তোর ভাইয়ার(আমার) কাছে” তখন আমিনুর এর নাকি কেমন মাথা চক্কর লাগল আর মনে হলো হ্যা সামনে আম্মুই বসা আছে আর ওকে আমার(ভাইয়া) কাছে আনতে চাচ্ছে।কিন্তু ওর আবার মনে হচ্ছে যে আমার সাথে আমার এত বড় মারামারি হলো একটু আগে তারপরেও আম্মুর সাহস কেমনে হয় ওকে আমার কাছে যেতে বলার।(আসলে আমার সাথে আমিনুর এর সেদিন কিছুই হয়নি!)ও আবার না বললে আমিনুর এর হাত চেপে ধরল সেই মহিলা।৪টা নখ বসে গেলে।মহিলাটার হাত বাচ্চাদের মত ছোট আর পাখির মত আংগুল+নখ।

আমিনুর প্রচন্ড ব্যাথায় হাত সরিয়ে নেবার চেষ্টা করছিল।হাত সরালে দেখে রক্ত পড়ছে ওই মহিলা আরো একবার হাত দিয়ে ওকে মারতে চেষ্টা করলে আমিনুর আবার হাত সরিয়ে নিতে যেয়ে ওর আংগুল এ আরেকটা আচড়া লাগল।হাত অনেক ছোট হওয়ায় আমিনুর কে মারা সময় মহিলাটার অর্ধেক বডি টেবিলের উপর উঠে আসে যেন টেবিলের উপর ভর দিয়ে আমিনুর এর হাত ধরছে।এবার অই মহিলা বিছানা থেকে উঠে আমিনুর এর ঘাড় টেবিলের উপর চেপে ধরে।আমিনুর এবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়।ও শুধু ভাবছিল এবার মনে হয় কেউ না আসলে আমি শেষ।টেবিলের উপর আমার ফিজিক্স বই ছিল।আমিনুর ওই অবস্থায় ওর আরেকহাত দিয়ে বইতে ধাক্কা দিয়ে বারান্দায় ফেলায় দেয়।এসব ধস্তা ধস্তির এক পর্যায়ে জ্ঞান হারায়।

আর তারপরের ঘটনা তো আগেই বললাম!

আচড় এর ছবি দিলাম।তারপর থেকে ওর সাথে ঘটে যাওয়া প্রায় সব কিছুই ছবি তুলে রাখি।নেট এ সার্চ করি।এখন এটা শিওর যে ও ব্লাক ম্যাজিক এর শিকার যেখানে ওকে ব্যাফোমেট(শয়তানের পূজা) এর পূজা এর জন্য বাধ্য করা হচ্ছে।

সেদিন রাতে আমিনুর কে সুস্থ করার পর ও স্বাভাবিক ছিল। ধারনা করেছিলাম যে হয়ত  ওকে চোখে চোখে রাখলে আর হুজুর দেখালে ভবিষ্যতে এমন  সমস্যা হবেনা আর।কিন্তু পুরোটাই ভুল ছিলাম আমরা।৪ টা হুজুর দেখানোর পর এখন এক জ্বীন  ওর ট্রিটমেন্ট করতেছে।অনেক অনেক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে ওর সাথে, যা লি

 

{ আরো পড়ুন – অভিশপ্ত কবরস্থান – ভয়ানক অভিশপ্ত কবরস্থানের গল্প!

 

পর্ব

 

আচড় লাগার পরের দিন থেকেই আমিনুর এর প্রব্লেম শুরু।সেদিন সন্ধ্যায় ও আমার হাতে হটাত ঢুলে পড়ে বলে যে খুব চিতকার চেচামেচি শুনতেছে, ও সহ্য করতে পারছে না।সে সময় আমরা এক ভাবীর বাসায় ছিলাম।ভাবী ওখানে ওকে কয়েকবস্র আয়তুল কুরসি পড়ে ফু দিলে ও সুস্থ হয়।বাসায় আসার পর আবার প্রব্লেম শুরু হয়।আব্বু কে ফোনে জানালে আব্বু হুজুর নিয়ে এসে ঝাড়ফুক করায়।সেদিন রাতে আবারো প্রব্লেম হয় ওর।কেমন পাগলামী করে, কিছু দিলে বাম হাত দিয়ে খায়,রাতের বেলায় বাইরে যাবে বলে আবদার করে।

সারা রাত জেগে ছিলাম সেদিন। সেদিন রাতে আমিনুর খাতায় কিছু প্রতীক আর একটা ক্রস চিহ্নিত পুতুল আকায়।ওকে স্বাভাবিক করার জন্য কম্পিউটারের সামনে বসাই ওকে।সেখানে পেইন্টার এও সেইম প্রতীক (গ্রীক ল্যাংগুয়েজ এর মত) আর সেই ক্রস চিহ্নিত পুতুল আকায়।সকালে ও স্বাভাবিক হলে ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ওইগুলার মানে কি।ও সে সময় নিজেও বুঝতেছিল না যে কিভাবে ওই রকম কঠিন জিনিস আকালো। যাই হোক, আব্বু সেদিন ওকে নিয়ে এক বড় হুজুর(কবিরাজ) এর কাছে নিয়ে গেলে উনি তাবীজ ও কিছু পথ্য দেন।বলেন যে ওর ঘাড়ে জ্বীন নাই দূর থেকে কিছু করতেছে তাই তাবীজ রাখতে হবে।

হুজুর এর কাছ থেকে আসার ১ দিন পর শুক্রবার ছিল।নামাজ পড়তে যাব। আমি চাচ্ছিলাম আমিনুর কে নিয়ে একসাথে যাব।তাই ওর গোছল শেষ হবার অপেক্ষায় ছিলাম।ও গোসল করার সময় আমার সাথে আগের মত হাসি তামাশা করছিল তাই আমরাও একটু সস্তিতে ছিলাম। কিন্তু জামাত শুরু হয়ে যাবার সময় হয়ে যাচ্ছিল বলে অগ্যতা ওকে রেখেই মসজিদে চলে যেতে হলো।আম্মু গোছলখানার পাশেই রান্নার জন্য কাজ করছিল।

বাসায় এসে দেখি আমিনুর বিছানায় উপুর হয়ে  শুয়ে কাপছে আর আম্মু ঘর গোছাচ্ছে।আমাকে দেখেই আম্মু বলল যে দেখ এসে ঘরের অবস্থা।

২ চেয়ার উল্টানো,মেঝেতে তেল ফেলানো, শোকেস এর অনেক জিনিসপত্র সব রুমে ছড়ানো ছিটানো যেন কেউ ঘর তছনছ করে ফেলেছে।আমিনুর স্বাভাবিক হলে ওকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছিল।ও বলল গোসল শেষ হলে ও বের হবার পর দেখে যে ট্যাংকি তে পানিভরে গেছে তাই পানি পড়তেছে।তাই ও মোটর অফ করতে ঘরের পেছন পাশ এ গিছিল।গোসল করার সময় তাবীজ খুলে রেখেছিল তাই সেটা আর পরতেও মনে নেই।

ও দরজা খুলে মোটর অফ করতে গেলে ওর জানি কেমন মনে হলো কেউ একজন ঢুকেছে ঘরে ওই দরজা দিয়ে।আমিনুর মোটর অফ করে ঘরে এসে আমার রুমে(যেখানে আমি আর আমিনুর থাকি) টেবিলের উপর দিয়ে আমার ফোনটা ধরে।হটাত পাশে দেখে আম্মু ওর পাশে চোখ মোটা করে তাকিয়ে আছে।আমিনুর কেমন জানি ভয় পেয়ে ওখান থেকে দৌড়ে বিছানায় লাফ দিতে যায় আর ওই আম্মুর মত মহিলাটাও ওকে ধাওয়া দেয়।আমিনুর দৌড়ে বিছানায় যাবার সময় হাতের কাছে প্যারাসুট নারকেল তেল এর বোতল পেয়ে ওটা মেঝে ফেলায় দেয় যেন আম্মু পা পিছলে পড়ে যায়।আর আমাদের ওই রুমে কাপড় নাড়ার জন্য যে দড়ি ছিল সেটাও ছিড়ে যায়।ওদের দৌড়াদৌড়ি তে।

মহিলাটা চেয়ার উচু করে আমিনুর এর পিঠে মারতে থাকে।আর  বিছানায় রাখা তাবীজ ও ফেলায় দেয় নিচে।ওই সময় কি একটা ভাষায় মহিলাটা চিতকার করছিল।

আমিনুর খেয়াল করে  আম্মু রান্না ঘর থেকে রুমের দিকে আসতেছে তখনই আম্মুর মত দেখতে ওই মহিলাটা ওকে মারা থামিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি রুমের দড়ি মূহুর্তের মধ্যেই লাগিয়ে দেয় আর একটা চেয়ার ঠিক করে রাখে এবং অন্য একটা চেয়ার ধরতে ধরতেই আম্মু রুমে ঢুকে গেলে ওই মহিলাটা উধাও হয়ে যায়।আমিনুর ও জ্ঞান হারায়!

এই ঘটনা বলার পর ও আমাকে জিজ্ঞেস করে যে হুজুর বাসার চারপাশে পড়া পানি ছিটাতে বলেছিল তা আমি ঠিক মতো করেছিলাম কিনা।তখন আমার মনে পড়ে কেন জানি বাসার ওই পাশটায় ছিটানো হয়নি!

তারপর থেকে আরো সতর্ক থাকতাম।ও টয়লেটে গেলে ওর সাথে যেতাম।জ্বীন যেহেতু আগুন ভয় পায় তাই ওর সাথে মোমবাতি দিতাম।অবাক করা বিষয় হলো যে ও বাথরুম এ মোমবাতি নিয়ে গেলেই সেটা নিভে যেত।আমি ভিডিও করেও দেখেছি যে মোমবাতি রাখলে আর আমিনুর থাকলে সেই মোমবাতি নিভে যেত। আর ও ভয় পেয়ে ডাক দিত। বা রুম এর এক জায়গায় মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখেছি রুম থেকে পাশের রুমে গেলেই মোমবাতি নিভে যেত অথচ আমিনুর তখন  ঘুম!

বর্তমান এ প্রব্লেম বলতে আমিনুর বেহুশ হয়ে যায়।মুখের উপর মগ ভরে পানি মারলেও ঘুম ভাংগে না কোনো ফিলিংসই নাই! একটু, হাল্কা একটু রাগ হলেই এই অবস্থা! কথা বলতে বলতে চোখ বন্ধ আর বেহুস।তারপর আম্মু আয়তুল কুরসি পড়ে ফূ দেওয়া শুরু করে।আব্বুর থেকে আম্মুরটায় কাজ বেশি হয়।তবে সব থেকে ভয় লাগে যখন ওর দম বন্ধ হয়ে যায় এবং  কাটা মুরগীর মতো ছটফট করতে থাকে।এই ভয়ে বেহুশ থাকাকালীন সব সময় পাশে থাকি ওর। দম বন্ধ হয়ে গেলে মুখ  খুলে দেবার চেষ্টা করি।আসলে কি যে করি নিজেরাও বুঝি না। ৪ টা হুজুর দেখাইছি।মনে হয় না তাতে কোনো কাজ হইছে!

আমিনুর বলতে পারে যে ও কি স্বপ্নে দেখে।যেন স্বপ্ন না বাস্তব।ওকে ট্রাই করা হয় শয়তানের পূজা করানোর।আর ওর উপর চলে অত্যাচার।যার দাগ প্রায়ই ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে দেখা যায়।

ওর সারা শরীর এ এখন মোট আচড় এর দাগ ৫ টা। বেহুশ হবার পর দেখা যায় এই অবস্থা! তবে আগের দিন হুশ ফিরলে ও বাথরুম এ যায়।তখন ফীল করে ওর ঘাড় অবশ হয়ে যাচ্ছে।ও ভয়ে আমার কাছে চলে এসে চুপ করে থাকে।খেয়াল করে দেখি ঘাড়ে আবারো আচড়।

 

জ্বীনের কবল

তৃতীয় পর্ব

 

চারিদিকে অন্ধকার।পুরোপুরি  অন্ধকার বললে ভুল হবে,চারদিকে লাভা এর বর্ডার।আমি সহ মোট ৪ জন, ৪ জন করে পাশাপাশি এবং আমাদের পেছনেও এভাবে ৪জন ৪জন করে মোট ৮ জন বসা।

সামনে একটা মূর্তী।গাধার মতো মুখ,শিং আছে, দেহ মানুষের মত।আমরা সবাই ২ পা ভাজ করে মূর্তীর দিকে গলাটা একটু উচু করে বসে আছি।কয়েকটি লোক আসল যাদের দেখতে কালো, মুখ স্পষ্ট না, পশুর মতো কেমন। তারা জোরে জোরে কিছু একটা পড়ছে এবং সেটা শুনে আমরাও পড়ছি।আর মূর্তির সামনে অলরেডী কয়েকজন পূজা করতেছে।তো ওই লোকেরা বলল যে কে কে তোমাদের জীবন উৎসর্গ করতে চাও? কয়েকজন ২ হাত উচু করলে তাদের কাছে লোক গুলা গেল আর হাত দিয়ে একটানে মাথা বডি থেকে ছিড়ে ফেলল! একদম চোখের সামনেই!

এত্ত বাজে দৃশ্য।কাটা গলা থেকে গলগল করে যে রক্ত পড়ছিল সেই রক্ত মূর্তীর গায়ে লাগয়ে দিয়ে সবাই উল্লাস করতে লাগল।আর এই দৃশ্য দেখে যারা অজ্ঞান হয়ে গেল তাদের জবাই করে সেই রক্ত দিয়ে একই কাজ করল।

এবার আমি সহ যারা তখনো সুস্থ আছি সকলের দম বন্ধ করে ফেলে।এতেও অনেকে মারা গেলে তাদের ও সেই একই ভাবে জবাই করে দেয়।তারপর যারা বাকি থাকে তাদের নিয়ে যায় আলাদা এক জায়গায়।শুরু হয় প্রচন্ড রকমের মারধর।আমার হাত-পা ভেংগে ফেলে মারতে মারতে।আর জিজ্ঞেস করে ‘কবে ভালো হবি’ ‘পূজা করতেই হবে’ এই ধরনের কিছু।অনেক অফারও করে আর রাজী না হলে পরিবার এর ক্ষতি করার হুমকি দেয়।তবে ইদানীং শুধু মার দেয়।

কোনো হুমকি না।মার খেতে খেতে একদম নুয়ে পড়লে আস্তে আস্তে দেখি যে চারপাশে ফ্যামিলির সবাই বসা।তারপর মনে হয় অনেক কষ্ট হয়ে গেছে।চোখ টা একদম বুজে যায়।আবার ঘুমাই যাই”–আমিনুর।(আমি  গুছিয়ে লিখলাম শুধু)

আমিনুর আগে বলতে পারত না কি দেখত ও।১৫-১৬ দিন হচ্ছে ও বলতে পারে।হাল্কা,হাল্কা একটু রাগ করলেই এই অবস্থা! রাগ টাও যেন কিভাবে হয়ে যায়!তারপর ঘুম।এটা ঘুম না বেহুস।পানি ছিটানো,চিমটি কাটা কিছুতেই কাজ হয় না।মুখের সামনে আংগুল ধরলে কামড় দেবার চেষ্টা করে।ওই সময় ওর চোখ দিয়ে পানি পড়লে সেটাও ও আংগুল এ লাগিয়ে চোষার চেষ্টা করে।আমরা আগে আয়তুল কুরসি পড়ার পাশাপাশি ওর চুলে একটা ম্যাচ এর কাঠি দিয়ে হাল্কা আগুন লাগিয়ে নিভিয়ে দিতাম।তাতে কাজ হতো।প্রতিবারই দম আটকে গেলে ওই কাজ করলে দম ছেড়ে দিত।

কিন্তু এখন আর রাগ করা লাগে না এমনিতেই কথা বলতে বলতে ঢুলে পড়ে।আবার আগুনেও আর কাজ হয় না।এখন ইউটিউব থেকে ফুল সাউন্ড এ ৪ কূল আর আয়তুল কূরসী চালিয়ে দেই।আর আম্মু আয়তুল কূরসী পড়ে ফু দিলে ১৫-২০ মিনিট এ ঠিক হয়ে যায় যদিও তারপর ঘুমায় অনেক সময়।রাত ৮-৯ টায় হলে আর ঘুম থেকে ওঠেও না সকাল ৮-৯ টার আগে।বলে যে খুব ক্লান্ত লাগছে।

যখন ওর হুশ ফেরে তখন থেকে টানা ১ ঘন্টার মত কোনো টু শব্দ ও বের করা যায় না।আর প্রতিবারই হুশ এ ফিরলে সাথে সাথে প্রচন্ড ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায়।অনেক ক্লান্তির জন্য।আগে ভয় পেতাম ওর দম আটকে যেত বলে।এখন ভয় পাই ওর শরীরের উপর টর্চার চলে বলে।

তবে গত বৃহস্পতিবার রাতে ওকে অনেক কষ্টে আয়তুল কুরসি পড়িয়ে ঘুম পড়াই।পরদিন সকালে আমিনুর অবাক করা এক কথা বলে।বলে যে ও সকাল থেকে একা থাকলে খুব আতরের ঘ্রান পাচ্ছে।ভোরে ও স্বপ্ন দেখে  যে চারিদিকে আলো।তারমধ্যে থেকে  সাদা জোব্বা পরা,অনেক সুন্দর নূরানী চেহারা দেখলেই মন ভরে যায় এমন একটা লোক হেটে ওর সামনে এসে সালাম দেয়।তারপর বলে যে তোমার সাথে যা হচ্ছে সেটা খুবই খারাপ।

তুমি কখনো পথভ্রষট হবা না আর ওদের কথা শুনবা না।তুমি বেশি বেশি করে দোয়া পড়বা,ঘুমানোর আগে পড়বা ইত্যাদি।আমিনুর কে আরো বলে যে যখনই তোমার ঝিম আসবে (মানে ওই প্রব্লেম শুরু হতে যাবে) আমাদের একটু স্মরণ করবা।আমরা চেষ্টা করব সাহায্য করার।এই বলে সে চলে যায় আর আমিনুর এর ঘুম ভেংগে যায়।

সেদিন সারাদিন আমিনুর বেশ হাসিখুশি থাকে।সেদিন রাতেও প্রব্লেম হয়নি।পরের দিন সন্ধ্যায় নামাজের পর ও আয়তুল কুরসী পড়ে। ১০-১৫ মিনিট পর ওর খুব মাথা ব্যাথা শুরু হয়।তারপর ঘুমিয়ে পড়ে।কিন্তু হুশ ছিল কোনো রকম।পরে হুশ ফিরলে এবং ঘুম ভাংলে জিজ্ঞেস করি কি হইছিল। পরে ও বলে যে উনি আসছিল আর আমাকে ওখানে থেকে নিয়ে আরেক জায়গায় নিয়ে যায়।তারপর একটা দোয়া পড়িয়ে বলে ঘুম পড়তে।

শনিবার রাতে আবারো প্রব্লেম হয়।তখন আম্মু এসে আয়তুল কুরসি পড়ে ফু দিতে দিতে হটাত দেখি আমিনুর বিড় বিড় করে কি পড়তেছে।আমি ওর মুখের কাছে কান রাখলে শুনি “সিনাতু ওয়ালা নাউম” তখনই বুঝতে পারি যে আয়তুল কুরসি পড়ানো হচ্ছে ওকে।আব্বু আম্মু আর আপু ছিল তখন পাশে।ওনাদের বলি টেনশন নিও না ঠিক হয়ে যাবে এখন।তার ৫ মিনিট পরেই হুশ ফেরে আমিনুর এর এবং আরো কিছুক্ষন ঘুমায় ও।

আগেও বলেছি যে ঘুম ভাংলেও ও অনেকক্ষন কোনো কথা বলে না।চুপ করে তাকিয়ে থাকে বা আবার ঘুমানোর চেষ্টা করে।শুধু ইশারায় হ্যা/না করে কিছু জিজ্ঞেস করলে।

সেদিন মাঝরাতেও প্রব্লেম হয়েছিল আমিনুর এর। পরেরদিন আমিনুর বলে যে ওই রাতে ওই লোক (যাকে ও স্বপ্ন দেখে,আমি বলি জ্বীন হুজুর) আসছিল ও মার খাবার পর।তারপর ওকে জিজ্ঞেস করে ব্যাথা পেয়েছে কিনা অনেক।আমিনুর তখন কান্না করে দেয় কষ্টে।উনি ওকে দোয়া পড়ায় একটা।তখন ব্যাথা আর রক্ত বন্ধ হয়ে যায়।তারপর বলে আমি এখন চলে যাব।তুমি আমার সাথে এই দোয়া পড়ে ঘুমায় যাও।

আমিনুর দোয়া পড়ে ঘুমায় যায়। এভাবেই চলতেছে।সব দিন যে এখন প্রব্লেম হচ্ছে তাও না।রবিবার আবার স্বপ্ন দেখে যে আমিনুর আর সেই পূজার জায়গায় যায়নি।ওই হুজুর এসে ওকে অনেক কিছু বলেছে।যেমন সবার সাথে একটু কম মেলামেশা করতে যেন হটাত করে রাগ না হয়, জীবনে সব সময় নিজেকে শক্ত রাখতে, দোয়া কালাম পড়তে কারন উনি তো সব সময় এসে সাহায্য করতে পারবে না।এইসব বলে ওকে দোয়া পড়িয়ে আবার চলে যায়।

বর্তমান অবস্থাঃ বর্তমান অবস্থা তেমন ভাল বলব না।গতকাল দুপুরে ওর প্রব্লেম শুরু হলে আমরা ট্রাই করি আমাদের মত।আগে যেখানে ২০ -২৫ মিনিট লাগত সর্বোচ্চ ওকে হুশ এ আনতে কাল সেখানে দেড় ঘন্টা লেগেছে।

দেখি যে ও ঘুমের মধ্যেই হটাত পাজরের হাড় এ হাত দিয়ে চেপে ধরে কুকড়িয়ে ওঠে! আর ঘুমের মধ্যেই কান্নার মতো! ৫ মিনিট পর আবারো! যেন কেউ একজন জোরে ওর ডান পাজরে লাথি মারল! দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল! আমি আব্বু আর আপুকে ডাক দিলাম।কি করব আমরা।আম্মু থাকলে এত কষ্ট হতো না।কিন্তু আম্মু স্কুল এ! আমি ভাবছিলাম সেই জ্বীন ও কেন আসছে না! ঘন্টা খানেক পরে দেখি ও দোয়া পড়ছে।তখন স্বস্তি পাই আমরা।কিন্তু বুঝতে পারি যে হাড়ে খুব লেগেছে।কারন বেহুশ থাকা অবস্থায় আমরা যখন ওই পাজরে হাত দিচ্ছিলাম ও নড়ে উঠতেছিল।

পরে ওর হুশ আসলে+ঘুম ভাংলে ও বিছানা থেকে উঠতেই পারছিল না।আমিনুর পরে বলছিল যে আজকে উনি রাগ করে দেরী করে এসেছে।উনি আসার আগে কেন আব্বু আসল না আমিনুর এর কাছে এই নিয়েই রাগ করেছিল।পরে আমিনুর কে যখন আরেকদফা মারতে যাবে তখন উনি এসেছিল।

কাল রাতে ব্যাথা কমেছে একটু।আব্বু বলছে ইনজেকশন দিবে।ওষুধ চলছে।হাটতে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে ওর।কাল রাতে ঘুমানোর আগে ওর কাছে আয়তুল কুরসি পড়ার জন্য দিয়েছি মাত্র,মোবাইলটা ধরেই ঘুমায় পড়ছে।আমার ভয় হচ্ছিল আবার যদি ওই শয়তানগুলা ধরে তাহলে এবার আরো বাজে কিছু হয়ে যাবে।আমি ইউটিউব এ ফুল সাউন্ড এ ৪ কূল+আয়তুল কূরসী চালায় দেই।২ মিনিট পর দেখি যে ও দোয়া পড়ছে।তখন বুঝলাম যে ওই জ্বীন হুজুরই আসছে।তারপর আমিও ঘুম পড়লাম।সকালে৷ শুনলাম যে হুজুর জিজ্ঞেস করছিল ব্যাথার কথা,বলেছিল যে ব্যাথা কমে যাবে আর দোয়া- দূরদ পড়াচ্ছিল।

তবে আমিনুর কে হুজুর এর মুখের কথা একদম ডিরেক্টলি শেয়ার করতে নিষেধ করেছে তাই আমিও পোস্ট এ ওনার পরের সব কথা গুলা ইনডিরেক্টলি বললাম।আর ওর ব্যাথাও কমে যাচ্ছে ট্রীটমেন্ট এর জন্য।

এবার আসি একটু অন্য প্রসংগেঃ

আমিনুর ওই স্বপ্নে যে মূর্তীটিকে দেখে তার ছবি আকানো ছিল ওর হাতে(একদিন পড়তে পড়তে ওর প্রব্লেম শুরু হলে কলম দিয়ে নিজের হাতে একেছিল) । পরে একদিন ইলুমিনাতি এর একটা ভিডিও তে দেখি যে ব্যাফোমেট নামের একটা মূর্তী যে ঠিক ওই আকানো মুর্তি আর ওর বলা স্বপ্নের মতই।পরে ওকে দেখালে ও শিওর হয় যে এটাই। আমিনুর কম্পিউটার এ আরেকটা ছবি আকাতো যেটা আমি ভাবতাম ব্লাক ম্যাজিক এর কোর্ট।

উইকিপিডিয়া তে ব্যফোমেট নিয়ে সার্চ করে দেখি যে সেইম ছবি আছে ওখানে। এছাড়াও আমিনুর স্বপ্নে ওই প্রানী গুলার শরীরে এবং ওই জায়গায় কিছু লেখা(Lilith,Samael) দেখত যেগুলা অনেক গুগল করে তার অর্থ বের করেছে ও আমার সামনে। প্রতিটি শব্দই গ্রীক লাংগুয়েজ এর। নিচের ছবি গুলো দেখতে পারেন।

জ্বীনের কবল

এখন একমাত্র রুকিয়াহ এর উপর নির্ভশীল আমরা। সাথে ওই জ্বীন এর হেল্প পাচ্ছি আমরা।আমিনুর কে নামাজ পড়ানোর পর চেষ্টা সুরা বাকারাহ,৪ কূল+আয়তুল কূরসী পড়ানোর চেষ্টা করি।

 

{ আরো পড়ুন – লাল_ডাইরী – এক অতৃপ্ত আত্মার রহস্য উন্মোচন

 

চতুর্থ পর্ব

 

গত পর্বে বলেছিলাম যে আমিনুর এর সাথে একটা ভালো জ্বীন আছে(ছিল)।আমিনুর কে আমরা পরে আরো এক কবিরাজ এর কাছে নিয়ে গেছিলাম।(তখনও কোনো রাক্বী খুজে পাইনি তাই অগ্যতা)।তিনিও বলেছিলেন ব্লাক ম্যাজিক।তাই উনিও পুতুল আর জবা ফুল দিয়ে জাদু টাইপ এর কিছু করে আমিনুর কে ফুলের রস খাইয়ে দিলেন আর পুতুল মাটিতে পুতে ফেলতে বললেন।এতে করে আমিনুর ১ দিন ঠিক থাকলেও প্রব্লেম পরে আরো বাড়ল।

ওর শরীর এর উপর অত্যাচার অসহনীয় হয়ে গেল।আর কবিরাজ বলল যে ওদের বাধা দিচ্ছি তাই খেপে যাচ্ছে।ঠিক হয়ে যাবে।যাই হোক আমিনুর বলত যে যেকোনো কবিরাজ এর কাছে গেলেই ওই জ্বীন হুজুরটা ওদের কান্ড দেখে হাসে আর বলে এরা ফ্রড।তারপর আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা একটা রাক্বি এর সন্ধান পাই।সে শনিবার সন্ধায় আসে আমাদের বাসায়।সব কবিরাজি পথ্য নষ্ট করে কারন এগুলা শিরক(আমরা নিরুপায় হয়েই কবিরাজ এর কাছে যেতান) রুকিয়াহ শুরু করে।পরে উনি বলে যে এটা ব্লাক ম্যাজিক।তো তারপর দিন আমিনুর ভালই থাকে।কিন্তু রাতে আবার প্রব্লেম এ পড়ে।

মারাত্মক প্রব্লেম! বারবার দম আটকে যায়।আর শরীর দাপাতে থাকে।মনে হয় এই বুঝি কিছু একটা হয়ে গেল।হুজুর সব সময় খোজ নিচ্ছিল আমিনুর এর।

উনি শুনে বলে যে মাশআল্লাহ কাজ হচ্ছে।তাই ওরা না পেরে এগুলা করতেছে।আমাকে একটু শিখিয়ে দিল রুকিয়াহ করানো।আমি করতে লাগলাম।টানা ২ ঘন্টা পরে ওর হুশ আসল! এভাবেই চলছিল।মাঝে হুজুর আবার আসে।সেদিন রুকিয়াহ করালে আমিনুর দেখতে পায় যে ওকে ওই পূজার স্থান থেকে সরিয়ে কয়েকটা পাহাড়ের মাঝখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সেখানে একটা পুতুলে সুই ফোটানো হচ্ছে আর যেখানে যেখানে ফোটানো হচ্ছে আমিনুর এর ও সেখানে ফুটে যাচ্ছে।বডি দাগ ও হয়ে যাচ্ছে।তারপর পুতুলের হাত দিয়ে চড় দেবার সাথেই আমিনুর নিজেকে নিজেই চড় দিচ্ছে।বুঝতে পারলাম যে এত দিন যা করেছি সব ভুল।আল্লাহর পথ বাদ দিয়ে শিরক-কুফর এর কবিরাজি চিকিৎসার আশ্রয় নিয়েছি।যাই হোক সেদিন হুজুর চলে যাবার পর থেকে আমিনুর বেশ ভালোই ছিল।তারপর হুজুর  ঢাকায় যাবার কারনে ১.৫ সপ্তাহ এর মধ্যে আসেনি।

আমিনুর এর মাঝে মধ্যে প্রব্লেম হতো আর একবার হলে সেটা অনেক সময় আর বেশি ভয়ংকর ভাবে হত।মাঝে একদিন আমাদের বিছানার খাট ভেংগে যায় প্রব্লেম এর মধ্যে।আমি বুঝতে পারি যে আমি রুকিয়াহ করছিলাম তাই এই অবস্থা।পরে আমিনুর বলে যে ওকে আছাড় মেরেছিল। তাই খাট ভেংগে যায়।

আমিনুর বলে যে ওই ভালো জ্বীন হুজুরটা আমিনুর কে অনেক হেল্প করে রুকিয়াহ করার পর থেকে।আমিনুর যখনই একা বাইরে যায় তখনই একটা মুরব্বি হয়ে ওর পিছে থাকে।আমিনুর ডাকলেই কাছে চলে আসে।ওকে রুকিয়াহ করায়।তো একদিন যোহর এর পর আমিনুর জায়নামাজ এর উপরেই চোখ বন্ধ করে ফেলে।

মনে হচ্ছে কি যেন বলছে আর দেখছে।আমি জিজ্ঞেস করি যে হুজুর(জ্বীন) আসছে? ও ইশারা দিল ‘হ্যা’।আবার এও বলে আস্তে আস্তে যে একটা খারাপ জ্বীন কেও নিয়ে আসছে যে আমিনুর এর ক্ষতি করে।আমি রুকিয়াহ করতে গেলে আমিনুর বার বার থামায় দেয়।আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না।তাই হটাত জেদ ধরলাম ওই ভালো জ্বীনের সাথে কথা বলব।আমিনুর কে বললাম কথা বলায় দিতে।ও রাজি হলো না।

তখন আমিই সালাম দিয়ে বললাম যে “হুজুর আপনার সাথে কথা বলতে চাই।আমিনুর আমার ভাই আর ওর ভালো-মন্দ বিচার করার অধিকার আমার আছে।আপনি আমাকে দেখা না দেন শুধু কথা বলেন।

হটাত আমার শরীর কেমন গরম হয়ে গেল আর মাথা ঝিলিক দিয়ে উঠল।যে আমিনুর কোনো কথা বলতে পারছিল না সে বলে উঠল ‘আসসালামু আলাইকুম!’একটা গম্ভির কণ্ঠ!

আমি অবাক। সালামের জবাব দিলাম আর বললাম “আপনি হুজুর?” উনি বললেন “হ্যা” আমি বললাম “আমার ভাইয়ের এই প্রব্লেম ঠিক হবে তো? কি করলে ঠিক হবে?” আমি আসলে খুব নার্ভাস ছিলাম আর ভাবসিলাম যে এই বুঝি উনি চলে গেল। “হ্যা হবে ইনশাআল্লাহ।রুকিয়াহ করা ছাড়া আর পথ নেই।” তারপর বললাম “আপনার জন্য অনেক দোয়া করি আল্লাহর কাছে” উনি আলহামদুলিল্লাহ বলে একটা মিচকি হাসি দিলেন। তারপর কথা বললে কোনো রেসপন্স নাই।বুঝলাম চলে গেছে।

আমিনুর তখনো সেন্সলেস অবস্থায় বসে আছে। কিছুক্ষন পরে ওর হুশ আসল, দেখি ওর চোখ লাল! ও বলল যে “ভাইয়া তুই অনেক জেদ করছিলি তাই হুজুর বলল যে কথা বলে আসি তোমার ভাইয়ার সাথে।আর উনি বেশিক্ষণ পারেনি কারন আমার উপর কখনো ভর করেনি আগে।তাই ওনার কষ্ট হচ্ছিল।” আমি জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা ওই খারাপ জ্বীনের কি হলো? তা আমিনুর বলল হুজুর জিজ্ঞাসাবাদ করছে।ও তেমন কিছু বলেনি।মুখ খোলেনি।

তবে আমিনুর এগুলা রাক্বী হুজুর কে জানাতে বারন দিছিল যে উনি কি মনে করবেন আর জ্বীন হুজুরও মানা করেছিল।এমনি রাক্বি হুজুর জানত যে আমিনুর এর সাথে একটা ভালো জ্বীন আছে।

এভাবেই চলছিল।আমিনুর বেশি একটা অসুস্থ হচ্ছিল না।তারপর থেকে ভালই হেল্প পেতাম।যেমন একদিন  আমি একা একা রাতের বেলায় বাসায় আসছিলাম তো আমিনুর কে ফোন দিয়ে বললে ও সেই জ্বীন হুজুর কে পাঠিয়ে দিল আমার কাছে।আমার শুধু শরীরটাই গরম হয়েছিল আর কিছু না।ভালই লাগত যে একজন ভাল কেউ সাথে আছে।

তো গত ৩ তারিখ রাতে আমিনুর বার বার আমার থেকে টাকা নিয়ে বাদাম খাচ্ছিল।পরে আমি আর আমার ফ্রেন্ড (সেদিন রাতে ফ্রেন্ড আমার বাসায়ই ছিল) বাসায় চলে আসি আর ও বলে যে ও একটু পর আসবে।আমিও মানা করিনি কারন হুজুর তো আছে।১০-১৫ মিনিট পর ও ঘরে ঢুকল আর দেখি ওর হাতে আরো একটা বাদামের প্যাকেট।ও বলল হুজুর টাকা দিয়েছে! আমরা অবাক!! কারন আসলেই ওর কাছে টাকা ছিল না।

যাই হোক সেদিন রাতে আমিনুর এর একটু প্রব্লেম হয়েছিল কারন ও আমার উপর অকারনেই রাগ করেছিল।(নামাজ পড়তে বলেছিলাম তাই তবে এই রাগটা যে ওর প্রব্লেম এর জন্য সেটা বুঝেছিলাম।ইচ্ছাকৃত না)  তারপর আমি আর আমার ফ্রেন্ড নামাজ পড়ে নিলাম ওর আর নামাজ হলো না শুয়ে পড়ল।আমি রুকিয়াহ করে দিলাম।

৩ জন বিছানায় শুয়ে আছি। ঘুমই আসছে না।রাত ২ঃ৩০ এর পর আমিনুর বলছে যে ও ওযু করবে,তাহাজ্জুদ পড়বে।আমরা অবাক!আমি বারন দিলাম এত রাতে পড়তে হবেনা। আমিনুর বলল হুজুর এর সাথে পড়ব।প্রতি রাতেই সবাই ঘুমায় গেলে পড়ি।আজ তোরা ঘুমাসনাই তাই দেখে গেলি।পরে ওকে ওযু করালাম।

ও লাইট অফ করে দিয়ে নামাজ এ দাড়ালো।জায়নামাজ এর অর্ধেক ফাকা রাখল। কয়েক রাকাত পড়ে আমিনুর রুম এর কোনায় কোনায় পানি হাতে নিয়ে কিছু একটা পড়ে জোরে জোরে মারতে লাগল।হ্যা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম,আমিনুর প্রব্লেম এর সময় ঘরের কোনায় কোনায় সাপ দেখতে পেত।যাই হোক,আমি আর আমার ফ্রেন্ড বুঝলাম যে জ্বীনদের গায়ে পানি মারতেছে।তারপর দেখলাম দেয়ালে চড়ও মারল।তারপর দরজায় ওই পানি দিয়ে আরবীতে কিছু একটা লিখল।আমরা শুধু চুপ করে বসে দেখছিলাম আমিনুর এর কাজ্! যেন এক বড় মাওলানা একা একা জ্বীনদের শায়েস্তা করতেছে।

আমি আর আমার ফ্রেন্ড অনেক প্রশ্ন করলেও কোনো উত্তর দিচ্ছিল আমিনুর।পরে সিদ্ধান্ত নিলাম আমরাও নামাজ পড়ব।পরের দিন নেভি তে এক্সাম ছিল তাই প্রথমে ভেবেছিলাম পড়ব না।কিন্তু এসব দেখে ভাবলাম আর ঘুম হবে না, আর জ্বীন হুজুর ও নামাজ পড়ছে যদি একসাথে পড়া যায়! আমিনুর কে বললাম উনি জামাত করুক।

আমিনুর বলল যে না।সবাই আলাদা আলাদা পড়।আর কেউ কিছু ফীল করলে ভয়ে পেয়ো না।হুজুর আছে এখানে।।আমাদের ২ রাকাত পড়া হলে আমিনুর বলল যে ইচ্ছা করলে জামাত এ পড়া যায়,আমাকে ইমামতি করতে বলল।

আমি জিজ্ঞেস করলাম যে উনিও পড়বে আমার পিছে নামাজ? আমিনুর হ্যা বলল! ৪ টা জায়নামাজ বিছানো ছিল।৩ জন মানুষ আর পিছের জায়নামাজ এ একটা জ্বীন,আমি ইমাম! ভাবলেই কেমন লাগছিল তখন।খুব গর্বিত লাগছিল(একটুও ভয় ছিল না।কারন ভয়ে আমিনুর এর প্রব্লেম এর জন্য অনেক আগেই চলে গেছে) নামাজ পড়লাম ভালোভাবে। রাত তখন ৩ঃ০৫ মিনিট।

আমি বললাম সবাই বসে একটু জিকির করি।তখন জ্বীন হুজুর চলে যায়।আমরা ৩ জন বসলাম।পরে আমিনুর বলল আচ্ছে ভাইয়া প্লান চ্যাট করে কেমনে? করবি? আমি বললাম হুজুর তো ভালো লোক,ওনাকে আনতে প্লান চ্যাট এর কি দরকার? আর ওগুলা খারাপ রা করে,, আর আমি পারিও না।তুই পারলে হুজুর কে এমনি ডাক।পরে আমিনুর বলল তাও তো করা যায়।আচ্ছা আজ তাহলে হুজুর কে বলি যে তোদের সাথে কথা বলতে।

আমিনুর সব লাইট অফ করে দিল।মানে আগে ঘরের মধ্যে৷ শুধু একটা ডীম লাইট আর মোবাইল এর চার্জার এর আলো ছিল আমিনুর তাও অফ করে দিল।পুরো ঘর অন্ধকার। এবার আমরা ৩ জন বসে পরে ২ হাত মানে ৩ জনের ৬ টা হাত একসাথে ধরলাম।আমিনুর বলল যে দুরদ শরীফ পড়তে থাক।আমি হুজুর কে ডাকি আর প্রমিস করালো যে চোখ বন্ধ রাখতে হবে।তো কিছুক্ষণ পর আমার আর আমার ফ্রেন্ড এর সেই একই ফিলিংস! শরীর গরম!

জ্বীনের কবল

হটাত গম্ভীর আওয়াজ আমিনুর এর মুখ দিয়েঃ

“আসসালামু আলাইকুম”

আমরা ২ জনেই সালামের জবাব দিলাম।কথা শুরু হলো।হুজুর বলল আজ অনেক সময় থাকব।ফজর পর্যন্ত (মানে ২-২.৫ ঘন্টা) যা ইচ্ছা আজ প্রশ্ন করো। উত্তর দিব।তারপর শুরু করলাম আমিনুর কে দিয়ে।তো হুজুর এর একই উত্তর “রুকিয়াহ” আর উনি এটাও বলল যে উনি চাইলেই সব ঠিক করতে পারবে না।

ঠিক করার মালিক আল্লাহ,আর উনি চেষ্টা করলে হয়ত ঠিক হতে পারে তবে আমিনুর এর অনেক বড় ক্ষতি করেই ওরা যাবে।তারপর আমরা জিজ্ঞেস করলাম “আমিনুর কই এখন?” উনি বললেন “ওর শরীর তো আমি ভর করেছি।ও এখন আমার বাসায়। ওর জন্যে আলাদা রুম আছে আমার।সেখানে।” তারপর জিজ্ঞেস করলাম আপনি ওর সাথে কেন? উনি উত্তর দিলেন ক্লাস ৪ থেকেই ওর সাথে তবে আগে ভয় পেত তাই সামনে আসত না।

আর এখন প্রব্লেম এ পড়ছে তাই আগে স্বপ্নে এসেছে এখন সামনাসামনি। এভাবে অনেক কথা হলো,ইলুমিনাতি সত্যি আছে কিনা(অবশ্যই,আমিনুর কে ওরাই কালো জাদু করেছে),ইমাম মাহদী এর জন্ম হয়েছে কিনা(হ্যা),মহাকাশে ভ্রমন করতে পারেন কিনা(১ম আসমান পর্যন্ত পারে) ইত্যাদি ইত্যাদি।আমিনুর সম্পর্কে বলল যে আমিনুর এর নাকি একটা শক্তি আছে যেটা জ্বীনদের আকর্ষন করে। তাই ওকে কালো জাদু করা হয়েছে। এই জ্বীন হুজুর কিন্তু একজন মহিলা,উনি সেটাও স্বীকার করল,কিন্তু পর্দার জন্য উনি নাকি সব সময় আমিনুর এর সামনে হুজুর বেশে থাকেন।

আমার ফ্রেন্ড প্রশ্ন করল “শুনেছি আপনারা মানুষ এর সুরত এ আসলে আপনাদের পা উল্টা থাকে?” উনি বলল এগুলা সত্য না।ওনারা মিষ্টি কিনতে যায় হোটেল এ। পা ঠিকই থাকে।তবে হ্যা,, কোনো ছায়া থাকে না। ওনার কথা গুলা বলার পর প্রশ্নটা ছিল “আচ্ছা তোমরা বলো,আগুনের ছায়া হয়?”

আরেকবার উনি বলল যে সবাই একটু দোয়া পড়ো,সাপ এসেছে রুমে।”আমি যে তোমাদের সাথে কথা বলছি তা ওই শয়তানদের সহ্য হচ্ছে না তাই সাপ হয়ে আসছে।কেউ চোখ খুলবা না আমি দেখতেছি ওদের।” যাই হোক এইভাবে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলল ফজরের আজান পর্যন্ত।উনি বলল “গত রাতে আমি টাকা দিয়েছিলাম আমিনুর কে।

তোমরা কি সেই বাদাম খেয়েছিলে?”।আমরা বললাম যে একটু খেয়েছিলাম।তা উনি বলল যে জ্বীনরা কিছু খেতে দিলে সেটা মানুষের সহ্য হয় না।আমিনুর এর নাকি পেটে সমস্যা হচ্ছিল তখন হুজুর এর ভাষ্যমতে।উনি বললেন এই জন্য উনি আমিনুর কে কিছু খেতে দিতে চান না।তারপরেও মাঝে মাঝে আমিনুর এর জন্য মায়া হয় বলে এটা ওটা কেনার টাকা দেন বা মিষ্টি খেতে দেন তবে খুবই কম। এভাবে গল্প হতে হতে ফজর এর আজান দিলে আর আমার আম্মু উঠে গেলে উনি সালাম দিয়ে চলে গেল।যাবার আগে বলল যে টেবিল এর উপর উনি যমযম এর পানি এনে রেখেছেন সেটা যেনো আমরা নামাজ পড়েই খাই।

আমরা নামাজ পড়ে নিলাম।আমিনুর বলল ওকে হুজুর নামাজ পড়িয়েছে ওইখানে।পরে সকাল ৬ টার পরে আমিনুর বলল যে হুজুর যেন আবার কি বলবে। আমি বললাম আসতে দে। বলুক কি বলবে। আমিনুর বিছানায় শুয়ে পড়ল ঘুমায় গেল ২ মিনিট এর মধ্যে সালাম দিল। বুঝলাম হুজুর এসেছে।

উনি বলল যে আজ তো বাসায় কেউ থাকবে না তা আমিনুর এর কাছে আমার ফোন টা রেখে গেলে ওর একটু ভালো লাগবেনে।হুজুর বলল যে আমিনুর খুব করে হুজুর কে ধরেছে আমাকে এটা বলতে না হলে আমি আমিনুর এর কথায় ফোন রেখে যেতাম না।আমি অজ্ঞতা বললাম আচ্ছা রাখবানি।এভাবে আরো কিছুক্ষন কথা হলো পরে উনি আমাকে আর আমার ফ্রেন্ড কে ক্লান্তি দূর করস্র ঝাড়ফুক করে চলে গেল।

 

 

পঞ্চম পর্ব

 

যেদিন আমি নেভিতে এক্সাম দিতে গেলাম সেদিন আমার ভাই এর সাথে ঘটে গেল এক ভয়ংকর ঘটনা। আমি জ্বীন হুজুর কে বলে রেখেছিলাম যে আপনি আজ আমার আব্বুর রূপ ধরেই এবং মানুষ হয়েই আমিনুর এর সাথে থাইকেন।উনি বলেছিল আমি এমনিই আমিনুর এর সাথে থাকি আর ওর সাথে তো আমার সব সময়েই কথা হয়।

সেদিন বাসায় এসে দেখি যে আমিনুর খুব অসুস্থ! বাসায় কেউ ছিল না তখন।আমিনুরকে হটাত জ্বীন গুলা এসে হামলা করে।এবার আর সেন্সলেস না।সরাসরি হামলা।আমাদের চার্জার লাইট টা ওর মাথার দিকে ছুড়ে মারে কপাল ভালো ওর মাথায় না লেগে দেয়ালে লেগে উপরের কাচ ভেংগে যায় লাইট এর।এবার ওই লাইট দিয়ে ওর হাতের উপর বাড়ি দেয়।এতে কাচ এর এক অংশ ঢুকে যায় হাতে।।আর পিঠে তো আচড় দেয়া তো চলেই।

এরপর আমিনুর দেখে যে আমাদের ফ্যান এর ব্লেড বাকিয়ে ফেলতেছে ওরা, হয়ত ওইটা ভেংগে ওইটা দিয়ে ওকে মারবে।আমিনুর অনেক কষ্টে দৌড়ে বাসার বাইরে চলে আসে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় বাজারে চলে যায়।না আব্বুকে ফোন দিয়েছে(মূলত ওইদিন অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আব্বুর সাথে রাগ করেছিল) না আমাকে।ও আমার এক বড় ভাই কে ফোন দেয়।উনি এসে ডাক্তার খানায় নিয়ে রক্ত পরিষ্কার করে আমার খালাবাড়ি যাবার জন্য গাড়িতে উঠিয়ে দেয়।

পরের দিন আমিনুর পিকনিক এ যায় মন্টু মিয়ার বাগানবাড়ি।ফোনে আমিনুর বলে যে পিকনিক  বাস এর  উপর দিয়ে বিল্ডিং এর উপর দিয়ে উনি আসল চেহারা(মহিলা) নিয়ে ডানা মেলে উড়ে উড়ে যাচ্ছে।অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে।এভাবে পিকনিক স্পট এও নাকি উপর দিয়ে ওড়াউড়ি করে এবং আসার সময়ও উড়ে ঊড়ে আসে যেটা শুধু আমিনুরই দেখে।

তো সেদিন ভোর রাত এ আমাকে আবার সেই জ্বীন হুজুর ডেকে দেয় নামাজ এর জন্য।মানে আমি রাতে বলে রাখি আমিনুর কে যে আমাকে যেন তাহাজ্জুদ এর সময় ডাকা হয়।তো ঘুমের মধ্যে হটাত বুঝতে পারি আমিনুর আমার শরীরে হাত রেখে সালাম দিল।আমি সাথে সাথে উঠে গেলাম।

দেখলাম ৪ঃ৩০ বাজে।আমি জিজ্ঞেস করলাম এত দেরী করে ডাকলেন যে।তাহাজ্জুদ তো মিস হয়ে গেল।তা উনি বলল যে আজ রাতে আমাদের বাসায় উনি তাহাজ্জুদ পড়েননি।তো আমাকে বলল যে তোমাকে একটা কথা বলব যেটা কারো কাছে বলা যাবে না,,আমিনুর কেও না।আমি বললাম যে কি? তা উনি বলল “তোমার ভাইএর কাছে শুধু আমি একা না।

আরো অনেকে আছে।আমি কাল যখন ওর সাথে পিকনিক এ যাচ্ছিলাম তখন পেছনে দেখি যে ৭ টি সাতান যা ওর কাছে বন্ধী এবং পেছনে আরো ৭০০ টা জ্বীন।আমি ভেবেছিলাম ওইটা আমারই কেউ।কিন্তু না সবাই দেখি আমিনুরকেই গার্ড দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।ওরা সবাই শুধু জ্বীনই না,জ্বীনের সর্দার।আমিনুর যখন ইচ্ছা করে তখনই কোনো জ্বীন এর সর্দার কে ডাকতে পারে এবং সে আসতে বাধ্য।” কথা গুলা আমার কাছে খুবই অবিশ্বাস্য লাগল।

আমি অনেক প্রশ্ন করলাম।উনি এক একটা সাপোর্টিভ উত্তর দিয়ে বুঝালো আমাকে।ওনার ভাষ্যমতে উনি আমিনুর এর কাছে কিছুই না আর আমিনুর এর সাথে এই প্রব্লেম হবার কারন হলো আমিনুর এই জ্বীন দিয়ে ইলুমিনাতি দের বিরুদ্ধে জিহাদ করে তাই। আর আমিনুর কখনোই এগুলা পার্সোনাল কাজে ইউজ করে না।

সেদিন সারাদিন আমি ভাবলাম এটা কি করে সম্ভব। নিশ্চই কোরআন হাদীস এ এর ইংগিত থাকার কথা।পরে আমিনুর কে জিজ্ঞেস করলাম সব।ওকে অনেক চাপাচাপি করার পর ও স্বীকার করল।অবাক করা বিষয় হলো আমিনুর প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে আমি কিভাবে জানলাম। নিশ্চই হুজুর বলেছে।আমি আমতা আমতা করতেই ও আমার কিছু একটা পড়ে আমার কপাল এ হাত রাখল।তখন আমার মনে হচ্ছিল ভেতর থেকে যেন কি একটা বের হয়ে আসতে চাইছে(খারাপ লাগছিল না) মানে খুব হাশি আসছিল আর জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছিলাম।

২০-২৫ সেকেন্ড পর ও ছেড়ে দিয়ে বলল হুজুর তাহলে এগুলা বলেছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম কেমনে বুঝলি? বলল এইযে তোর ক্বারীন জীন এর থেকে শুনলাম! আমি অবাক! মাথা আউলায় যাচ্ছিল যে কি হচ্ছে এগুলা!

পরের দিন রাক্বী হুজুর আসল।আমি ভাবছিলাম বলব না তাকে এই ব্যাপারে কিছু।কিন্তু ভাবলাম যে বলি,উনি কি বলে।পরে ওনাকে সব খুলে বললাম সেই জ্বীন এর প্রথম আসা থেকে।উনি শুনে বলল “অনেক বড় ধোকা”!! এ ব্যাপারে কোরআন এই আছে যে আল্লাহ একমাত্র হযরত সুলাইমান আলাইহিসসালাম কেই এই শক্তি দিয়েছিলেন যা আর কোনো  সাধারন মানুষতো দূরে থাক কোনো নবী রাসূল ও পায়নি।

এমনকি মহানবী (স.) ও একদিন একটা শিশু রুপি জ্বীন কে ধরেছিলেন এবং সুলাইমান আলাইহিসসালাম এর কথা চিন্তা করে তাকে আটকে না রেখে ছেড়ে দেন!

হুজুর কে নিয়ে ঘরে প্রবেশ এর সাথেই আমিনুর আমাকে বলে ” ভাইয়া তুই কি হুজুর কে সব বলে দিয়েছিস? ওই হুজুর(জ্বীন)  কিন্তু আএ পাশে নাই” আমি বললাম হুজুর কে বল।এরপর আমিনুরও হুজুর কে বলল সব।ওর ভাষ্যমতে আসে পাশের জ্বীন গুলাকে ও মানুষের মতই দেখতে পায় এবং ইচ্ছা করলেই তাদের নিজের অনুগত করতে পারে।

।হুজুর বলল যে একটা মানুষ জ্বীন তখনই দেখতে পায় যখন সে জ্বীন দ্বারা আক্রান্ত হয়।আর আমিনুর যেটা দেখে সেটা একদম মিথ্যা নয় আবার সঠিকও না।এটা ধোকা।আক্রান্তকারী জ্বীন ই এগুলা দেখাতে পারে এবং আমিনুর কে বুঝায় যে আমিনুর এর অনেক ক্ষমতা।  আর ব্লাক ম্যাজিক করা জ্বীন গুলা মারাত্নক লেভেলের বেয়াদব হয়।ওরা ধোকা দেবার জন্য মানুষের সাথে নামাজ পড়া কিংবা কোরানের আয়াত শুদ্ধ তেলাওয়াত করতে পারে।

তো হুজুর বলল “ঠিক আছে,যদি ওই জ্বীনটা ভালই হয়ে থাকে তাহলে আজকে আমার সাথে কথা বলুক”। হুজুর রুকিয়াহ শুরু করে। আমিনুরও মাঝে মাঝে সেন্সলেস হয় আবার ঠিক হয়(এমনটাই হয় প্রতিবার)।এবার আমিনুর বলে ওঠে যে “হুজুর,ওই জ্বীনটা শয়তান! আমার সামনে ৭ টা জ্বীন দাড়ানো আর ওর মধ্যে ওই মহিলাও আছে!” “আর ওরা কিছু একটা বলতে চাচ্ছে”

৩০-৪০ মিনিট পরে আমিনুর এর উপর ওরা ভর করে।কথা বলতে পারছিল না।ওর গলা খুব কাপতেছিল।পরে হুজুর জিজ্ঞাসা করল কয়জন আছো তোমরা? আংগুল দিয়ে দেখাল ৭ জন।হুজুর বলল “বের হয়ে যাও,নাহলে অনেক কষ্ট পাবা” ওরা ইশারায় বলল “না,যাবে না”।

এভাবে রুকিয়াহ চলতে লাগল।এবার হটাত তারা ইশারা দিয়ে বোঝালো যে ৩ জন বের হয়ে যেতে চায়।

হুজুর জিজ্ঞেস করল ওদের ধর্ম কি? ওরা কি মুসলিম?

উত্তরঃনা! হিন্দু? উত্তরঃনা। স্যাটানিক? ওরা হেসে উত্তর দিল হ্যা! আর ডেভিল এর সাইন দেখালো।

হুজুর তখন ইসলাম ধর্মে আসার উপদেশ দিল।প্রথম ৩ জন তো দেখলাম হুজুর এর হাত ধরে কালেম পড়ল।(এসব কিছু ওরা ইশারা দিয়ে প্রকাশ করছিল,কথা বলে না) যাই হোক, বাকি ৪ জন শুনলাম যাবে না।

হুজুর বলল তোমরা থাকো,মেহমানদারী বাকি আছে।হুজুর মাঝে এও জিজ্ঞেস করেছিল যে ” সেই হুজুর সাজা জ্বীন আছো এখনো? ” ওরা  হেসে উত্তর দিল “হ্যা!”  ১০ মিনিট পর আরেকজন বলল যে চলে যাবে। হুজুর তাকে ইসলামের কথা বলতে বলতেই যেন সে চলে গেল।(চলে গেলে বাকি গুলা ইশারা দেয় ও চলে গেছে আর আমরা যাবো না) পরে আরেকজন চলে যেতে চাইল, এবং সেও চলে গেল।বাকি থাকল ২ জন।

এবার এই ২ জন অনেক সময় ধরেই চুপ করে ছিল।পরে বার বার ইশারা দিয়ে বোঝালো কিছু বলতে চায় তারা।।তারা চলে যাবে কিন্তু পারছে না যেতে।আমি বললাম যে তাহলে ওরা কি খাতা কলম ব্যবহার করে লিখে দিতে পারবে?

ওরা ইশারা দিল না।আমি তাও এনে রাখলাম খাতা-কলম।পরে ওরা চুলে গিড়া দিয়ে আমিনুর এর হাতে ধরার কথা বলল(ইশারায়,বুঝতে অনেক কষ্ট হচ্ছিল আমাদের) যাই হোক এই করতে করতে ওরা রাত ১.৩০ এর পর লেখা শুরু করল।

ওরা বলল (লিখল) যে ওরা মারা গেলে আমিনুর বোবা হয়ে যাবে।হুজুর বলল বিশ্বাস করি না এগুলা।পরে বুঝানো শুরু করল ওদের জাদু দিয়ে আটকানো।তাই ইচ্ছা করলেও যেতে পারবে না।জাদু করা হয়েছে একটা তিমি মাছের ভেতরে।এই তিমি মাছ মারা গেলে আমিনুর এর লাইফ নষ্ট হয়ে যাবে।আর তিমি মাছ কয়েকদিন আগেই একটা মাছ খেয়েছে যার মধ্যেও আরেকজন এর জাদু ছিল।ওই মাছ মারা গেলেও সমস্যা।

ওরা চুক্তি করল যে আমাদের আগে জাদু কাটতে হবে।তাহলে ওরা যেতে পারবে।এর মধ্যে ওদের কোনো টর্চার যেন না করা হয়,ওরাও মুক্ত হতে চায়। আর ওরাও আমিনুর কে ইচ্ছাকৃত ভাবে টর্চার করবে না।ওরা জানায় যে ওদের বড় বোন ছিল এই ৭ জনের লিডার।আর ও থেকেই সাতান দিয়ে এই জাদু করিয়েছে।শুধু তাই না ওই মহিলা খুবই ধোকাবাজ আর ওই ২ ভাই কেও ওই বোনই বন্দী করিয়ে তাদের এই অবস্থা করেছে।তাই ও যখন বের হয়ে যাচ্ছিল তখন ওই মহিলাকে ওরা ২ ভাই মেরে ফেলেছে। এর পরে আমি যখন রুকিয়াহ করতাম তখন ওরা আসত আর এটা ওটা করতে বলত।(ওকে পানি খাওয়ান,ও আজ খুব অসুস্থ হয়ে পড়বে ইত্যাদি ইত্যাদি।)

তাই হুজুর কালো জাদু কাটার জন্য ৭ দিন বরই পাতার পানি তে কিছু সূরা(নেটে সার্চ করলেই পাবেন) এর আয়াত পড়ে ফু দিয়ে  গোসল করতে বললেন।ওইটা করলে কালো জাদু কাটে আল্লাহর ইচ্ছায়।কাল শনিবার ওর ৭ দিন হবে।

এখন আমি নিজের কিছু কথা বলি।অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে তাহলে আগের পোস্ট এ কেন ওনাকে জ্বীন হুজুর বলে আখ্যায়িত করলাম?

আসলে আপনারা ১ দিন আগেই পড়ে ওনার উপর এত বিশ্বাস করেছেন।আর এখন শুনলেন ওইটা ধোকাবাজ! হ্যা,আর আমরা ২ সপ্তাহ বিশ্বাস করে এসেছি ওনাকে। যখন জানলাম যে ওইটা ধোকাবাজ তখন শুধু অবাকই হচ্ছিলাম যে এত্ত বড় ধোকা খেলাম! এত্ত বড়? নামাজ পড়লাম,রাত ৩ টায় একসাথে গল্প করলাম এক শয়তান এর সাথে?

উনি যমযম এর পানি দিয়ে গেছিল তাহলে সেটাও হয়ত নাপাক পানি ছিল! নাউজুবিল্লাহ। তবে ওর কিছু কিছু কথা সত্য ছিল। আর ইমাম মাহদী কে নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবটা ছিল যে “আমরা এই নিয়ে কোনো গবেষণা করিনি,আল্লাহই ভালো জানেন কবে আসবেন,,তবে এতটুকু জানি যে ওনার জন্ম হয়ে গিয়েছে” “ইলুমিনাতি আছে, আর  শয়তান জ্বীন গুলাকে বলা হয় সাতান”।

আর ওই জ্বীনটা মুলত আমাদের রাক্বী হুজুর থেকে দুরে রাখারই চেষ্টা করছিল।মানে আমাদের কাছে উনি ছিলেন পীরের মত ভালো লোক।তাই আমরাও রাক্বী হুজুর কে তেমন ফোন দিতাম না।আর উনিও তখন  ঢাকায় ছিলেন।

 

বর্তমান অবস্থাঃ আজ বিকালে আমিনুর এর রক্ত বমি হয়।কোনো খাদ্য পেট থেকে বের হয়নি।শুধু পচা+দুর্গন্ধযুক্ত  রক্ত।হুজুর কে জানালাম উনি বলল ভালো লক্ষন।জাদু টা কেটে যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।  আর আজ সারা দিন ওই ২ টার ও কোনো উপস্থিতি টের পাইনি।আজ সকাল আর জুম্মার আগে ২ বার সেন্সলেস হয়েছিল(তবে আজ ডাক দিলে আমিনুর রেস্পন্স করেছে)

কিন্তু আজ রাত সাড়ে ৮ টার একটু আগে  আমিনুর বিছানায় শুয়ে পড়লে আমার সন্দেহ হয়।আমি ওকে দোয়া পড়তে বলি।কিন্তু ও পড়তে চায় না আর শুধু হাসে।দেখি বাচ্চাদের পা দাপাচ্ছে।আমি বললাম এটা কি? বলল ও নিজে থেকে করছে না।আমি বিসমিল্লাহ বলে বলে পা এ থাবা দিলে বন্ধ হয়ে গেল। এবার যেই রুকিয়াহ শুরু করলাম তখনি আমিনুর বিছানা থেকে লাফায় উঠল যেন বাম পায়ের মাংশ পেশিতে কি একটা হয়েছে।

ও বিছানা থেকে সব কিছু ছুড়ে ফেলে বলল সাপ সাপ।।আমাকে সাপে কামড় দিয়েছে।আমি একটা কোলবালিশ দিয়ে পুরো ঘর আউজুবিল্লাহ বলে বলে ঝাটা পিটার মত করলাম।(এটা হুজুর থেকে শেখা,এটা রোগীর ভয় কাটানোর জন্য আর খারাপ জ্বীন রুম থেকে তাড়ানোর জন্য)। তারপর পা এ হাত রেখে সুরা ফাতিহা পড়ে পড়ে রুকিয়াহ করলাম কিন্তু আমিনুর আর বাম পা নাড়াতে পারছে না!  ২ ঘন্টা হয়ে গেছে।১ বিন্দুও চেঞ্জ নাই।একদম বাম পা প্যারালাইজড। কোনো অনুভুতি নেই।

হুজুর কাল আসবে সন্ধ্যায়।

আল্লাহ ভরসা।

 

{ আরো পড়ুন – সত্য ঘটনা

 

ষষ্ঠ পর্ব

আসসালামু আলাইকুম,

বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল আমিনুর এর আপডেট জানাইনি।আসলে এটা  চলমান ঘটনা তাই যখন তখন পোস্ট দিয়ে ঘটনা শেয়ার করা যায় না।তাছাড়া আমিনুর এখন আল্লাহর রহমতে আগের থেকে বেশ সুস্থ তাই ভেবেছিলাম হয়ত একদম সুস্থ হলেই পোস্ট দিব। তবে আগের দিন একটা ঘটনা ঘটে গেছে।আজ ওর অবস্থা আর সেই ঘটনা শেয়ার করব।

লাস্ট পোস্ট এ বলেছিলাম যে জ্বীন সাপ এর কামড়ে বাম পা প্যারালাইজড হয়ে গেছিল।আল্লাহর রহমতে পরের দিন রুকিয়াহ করলে ভালো হতে শুরু করে এবং ২ দিন পর পা ঠিক হয়ে যায়।

তো সেই দিন(রুকিয়াহ এর দিন) ওইযে ২ টা জ্বীন যারা কালো জাদুর বাধা ছিল তারাও আমাদের কিছু পরামর্শ দিয়ে চলে যায়।তারা জানায় যে আমিনুর কে নতুন আরেকটা জ্বীন আসছে সে সাপ হয়ে এসেই কামড় দিয়েছে।তার নাম তারিন।তাদের ভাষ্যমতে তারা যখন আমার হাত ধরে মুসলমান হয়েছিল তারপর থেকে তাদের উপর জাদুর প্রভাব নষ্ট হয়ে গেছে এবং তারা মুক্ত হয়ে গেছে।

রাক্বী হুজুর আসলে ওনার কাছ থেকে ওই ২ জ্বীন(ভাই) ইসলামিক নাম নেয়।যাবার সময় উপহার স্বরূপ ৭ টা লিচু পাতা দিয়ে যায় যেগুলা নতুন যে জ্বীন ওর পিছনে লাগছে সে সাপ হয়ে আসলে তার উপর পাতা রাখতে বলে এতে নাকি ওদের শক্তি কমে আসবে।হুজুর জিজ্ঞেস করলে তারা বলে এটা কুরআন খতম করেই পাতা গুলা পড়া।তবে আমরা সেটা ব্যবহার করিনি। কারন হুজুর এর মতে রুকিয়াহতেএকমাত্র আল্লাহই সহায়ক এবং সূরার আয়াত ও দোয়াটাই আসল নিয়ামক।আর চিকিৎসা হিসেবে ওর রুকিয়াহ+রুকিয়াহ গোসল+রুকিয়াহ অডিও চলছে।

তারপর আমিনুর এর মাঝে মাঝে প্রব্লেম হত।বিশেষ করে রাতে আয়না দেখলে বা খাট এর নিচে তাকালে।কারন ওই সময় তখন ও সেই সাপ জ্বীন(তারিন) কে দেখত।আর হ্যা,একটা জিনিস খেয়াল করেছি যে হয় ওর প্রব্লেম হলে বাইরে অনেক কুকুর ডাকাডাকি করে আর না হয় বাইরে অনেক কুকুর ডাকাডাকি করলে ওর সমস্যা হয়।

ইদানীং আমিনুর এর এখন তেমন প্রব্লেম হয় না।হলেও ২-১ দিনে ১ বার।তবে প্রতিদিনই রুকিয়াহ অডিও শোনার সময় মুখ দিয়ে  রক্ত পড়ে। এছাড়াও মাঝে মাঝে ঘুম থেকে ওঠার সময় এবং ঘুমে থাকলে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে।হুজুর বলল যে রুকিয়াহ এর জন্য এবং জাদু কেটে যাবার লক্ষন এই রক্ত পড়া। জাদু কেটে গেলে ইনশাআল্লাহ ওর পিছে আর খারাপ জ্বীন গুলা থাকতে পারবে না।

তো গত  বৃহস্পতিবার রাতে ওর সাথে একটা ভয়ংকর ঘটনা ঘটে।সেটাই আজ শেয়ার করছি।

গতরাত ৪ঃ৩০ এর দিকে হটাত আমার ঘুম ভেংগে যায়।আমি দেখি যে পাশে আমিনুর ঘুমানো নেই।ও আমার পা এর কাছে বসা।আমি ডাক দিতেই ও আমার ফোন টা চার্জ এ রেখে বাথরুম এ চলে যায়।

আমার খুব রাগ হয় যে তারমানে আমিনুর আজ সারা রাত না ঘুমিয়ে আমার ফোন ইউজ করেছে। ৫-৭ মিনিট পর ও বাথরুম থেকে ফিরে আসে।কিন্তু বিছানাতে আর ওঠে না।চুপ করে দাড়িয়ে কি একটা ভাবতে থাকে।আমি তখন জেগেই ছিলাম কিন্তু অন্ধকার এ আমিনুর সেটা বুঝতে পারেনি।

দেখলাম ৩-৪ মিনিট ওভাবেই দাড়িয়ে আছে এবং এক চুল ও নড়ছে না।আমি তখন উঠে লাইট জ্বালিয়ে আমিনুর কে পাশে বসালা।আমি বুঝতে পারলাম হয়ত বাথরুম এ যেয়ে কোনো সমস্যা হয়েছে।

তো আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে।ও কিছুই বলল না।আবারো জিজ্ঞেস করলাম “বাথরুম এ কিছু হয়েছে?”

উত্তর দিল, “না!” তারপর পাল্টা প্রশ্ন করল “তুই কি এত সময় ঘুমিয়ে ছিলি?” আমি অবাক হয়ে বললাম “হ্যা! আর এত সময় বলতে কত সময়?আমি তো কেবলই উঠে তোকে ডাক দিলে তুই বাথরুম এ চলে গেলি।” আমিনুরকে বললাম যে কি হয়েছে খুলে বল।

ওর বর্ণনায়ঃ

‘আমি ঘুমায় ছিলাম। হটাত আমার কপালে ৩ ফোটা পানির মত পড়ল।আমি খেয়াল করে দেখলাম রক্ত।ঘুম ভেংগে গেল।পাশে তাকিয়ে দেখি তুই আমার দিকে তাকানো আর হাতে ফোন এবং মেসেঞ্জার চালাচ্ছিস।দেখি রাত ২ টা বাজে তখন।তো আমাকে তুই বলছিস যে ” ভাইয়া,আমার না খুব ভয় লাগছে, তুই আমার সাথে একটু জেগে থাকবি?

আমি বললাম যে আমার তো ঘুম আসতেছে।তা তুই তখন আমার কাছে ফোন দিয়ে বললি রুকিয়াহ শুনতে আর ফেসবুক চালাতে।আর বললি যে তুই ঘুমায় গেলে যেন আমি ঘুমাই।

আমি ফোন নিয়ে ২-৩ মিনিট ইউজ করতেই তুই আবার বলে উঠলি “ঘুম আসছে না,চল বাইরে যাই”। আমারও কেমন ভালো লাগল আর ভাবলাম ” হ্যা, ভালোই হবে রাতে বাইরে যেতে” আমিও বললাম আচ্ছা।তারপর তুই রুমের দরজা খুললি আর আমি আব্বু-আম্মুর রুম থেকে গেট এর চাবি নিয়ে এসে দরজা খুললাম।

তারপর ২ জনে বেরিয়ে পড়লাম।এভাবে মহিলা মাদ্রাসা এর কল পর্যন্ত গেলাম(বলে রাখি,মহিলা মাদ্রাসা আমাদের বাসা থেকে বেশ দূরে।হেটে যেতে ১০-১৫ মিনিট লাগে।আর ওইখানে যাবার রাস্তাটাও খারাপ আর ভূতুরে,একটা স্থানে ২ পাশেই কবর থাকে)। তারপর বললাম যে “ভাইয়া,বাসায় চল,আব্বু উঠে গেলে আজকে শেষ!” তুইও বললি আচ্ছা চল।

তারপর বাসায় চলে আসলাম।তুই আগেই ঘরে ঢুকে গেলি আর আমি দরজায় তালা মেরে রুমে ঢুকে দেখি তুই টানা ঘুম! কেমন অবাক হয়ে গেলাম যে ভাইয়া এত্ত দ্রুত ঘুমায় গেল! আমি যেয়ে বিছানায় বসলাম।তারপর ৫-৭ মিনিট পর হটাত তুই আমাকে ডাক দিলি! আমার কেমন একটা লাগল।আমি তাড়াতাড়ি বাথরুম এ চলে গেলাম আর অনুভব করলাম যে আমার মুখের মধ্যে চুল আর নখ ভরা।বাথরুমে গিয়ে ওইটার সাথে রক্তও পড়ল।তখন জানি কেমন আমার হুশ হলো এত সময় তাহলে কার সাথে বাইরে ছিলাম।এর আগে যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম’

আমি অবাক হয়ে সব শুনলাম।ফোন চেক করলাম যে সত্যি সত্যি ও আমার ফোন ইউজ করেনি। ইউটিউব ইউজ করেছে মাত্র ১৭ মিনিট।ওর ভাষ্যমতে রাস্তায় হাটার সময় ও ইউটিউব থেকে ২-৩ টা ইংলিশ গান আর ২ টা হিন্দি গান চালিয়েছিল মাঝে।হিন্দি গান নাকি আমার কথামতই চালিয়েছিল!

আমি বাকি জিনিস (ওর জুতা,চাবি) চেক করলাম দেখলাম আসলেই সব কিছু জায়গামত নেই।! ও আমাকে এগুলা বলার পর খুব শকড ছিল।ভেংগে পড়েছিল।আমি ওকে ঘুম পড়িয়ে দিলাম।তারপর নিজে উঠে ওযু করে নামাজ পড়ে নিলাম।

 

{ আরো পড়ুন – ভূতের গল্প

 

পর্ব-৭

 

লকডাউন এর কারনে রাক্বি হুজুর আসতে পারেন না রুকিয়াহ করতে।তাই আমি ভাবলাম আমি নিজেই ট্রাই করি।কারন আমিনুর কে ত্বারিন জ্বীন খুব শক্ত ভাবে ভর করতেছিল প্রায় এবং সেই ভর অবস্থায় ও খাওয়া এবং নামাজও পড়েছে আমার সাথে।অনলাইন থেকে রুকিয়াহ এর পিডিএফ নামালাম আর প্রয়োজনীয়  কিছু অডিও।

আমি মূলত কালো জাদু কিংবা জ্বীন কষ্ট দেবার অডিও(যেটা প্রয়োজন হতো) চালিয়ে তারপর রুকিয়াহ করি। পার্থক্য এই যে রাক্বী হুজুরের মত সব সূরা পড়তে পারি না তবে উনি যেভাবে করে তাই করি এবং অনলাইন থেকেও কিছুটা শিখেছি।যাই হোক, পরের দিন দুপুরে শুরু করলাম।এতে করে একটা জ্বীন হাজির হলো বেশ পর।

আমি বললাম “কথা শুনব না কোনো।হয় চলে যাও না হয় এখানে থেকে কষ্ট ভোগ করো।” বেশ কয়েকবার সে ইংগিত করল কথা বলার সুযোগ দেবার।আমি বললাম ‘বলো কি বলতে চাও’ তখন উত্তর দিল “আমি আব্দুর রহমান(মানে সেই পুরানো জ্বীন,যে মুসলমান হয়ে চলে গেছিল)

আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন এসেছ, তুমি তো চলে গেছিলে। ও বলল যে ও আমাদের ওয়াদা করিয়েছিল যে আমিনুর যেন কোনো হুজুর কে সাহায্য করে কিছু দিয়ে, সেই ওয়াদা এখনো কেন পুরন করলাম না তাই শুনতে এবং মনে করিয়ে দিতে এসেছে।

সে এও বলল “আমরা অন্যদের জাদু করলে, চলে যাবার সময় কঠিন কঠিন ওয়াদা করাতাম যেন সেটা তারা দ্রুত পুরন করতে না পারে এবং সেই সুযোগ এ আমরা তার ক্ষতি করে যেতাম।আপনাদের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহন করেছি তাই আপনাদের এই ছোট ওয়াদা করিয়েছি তাও কেন পালন করছেন না?”

আমি বললাম “তোমার ওয়াদা পূরন করা হবে,চারদিকে লক ডাউন।যেহেতু এটা ভালো ওয়াদা তাই পুরন করব তবে ওয়াদা পূরন না করলে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ শাস্তি দিতে পারবে না, তোমার ভয় আমরা পাই না সেটা তুমি ভালো করেই জানো।”

এই বললে ও কেমন জানি দমে যায়।তারপর বলে ” আর ওই ত্বারিন কিন্তু আমিনুর কে শক্ত ভাবে ভর করে,কাল মাগরিব এর নামাজ কিন্তু আমিনুর পড়েনি,ওই ত্বারিন আপনার সাথে পড়েছে।আর আপনার এই রুকিয়াহতে কাজ হচ্ছে না, হুজুর কে ডাকেন।

আমি উত্তর দিলাম ” কাজ হোক না হোক,করে যাই।হুজুর তো আসতে পারছে না এখন।আর আপনিও দয়া করে আর আসবেন না।হুজুর মানা করেছে”

সে যাবার সময় এও বলে গেছিল আমিনুর কে ত্বারিন ভর করলে ওর ডান পায়ের বুড়ো আংগুল এর উপর আরেকটি আংগুল উঠে যায়।।আমিও খেয়াল করেছি সেটা।

আমি হুজুর কে ফোন দিয়ে সব জানালাম।হুজুর বলল ” যে হয়ত ও ধোকাবাজী করছে।তুমি রুকিয়াহ চালায় যাও।কাজ হচ্ছে বলেই তোমাকে থামানোর জন্য এসব কথা বার্তা”। হুজুর এর কথা শুনলাম।যদিও আমি শিওর না যে জ্বীনটা আসলেই ধোকা দিচ্ছে কিনা।

তারপর প্রত্যেক দিন রুকিয়াহ গোসল+ মাগরিব এর পর আমি রুকিয়াহ করি ওকে।আল্লাহর ইচ্ছায় সেই ত্বারিন জ্বীন হাজির হয়।প্রথম যখন হাজির হয় তখন আমাকে আমিনুর বলে ওর ভালো লাগছে,রুকিয়াহ অফ করতে।অথচ একটু আগেও আমিনুর বলছিল যে ওর খারাপ লাগছে বলতে বলতে ও জ্ঞান হারায়।

তারপর ২ মিনিটেই এত ভালো! দেখলাম পা এর আংগুল একটার উপর আরেকটা।আমি বললাম সূরা ইখলাস পড়তে।।পড়তে চাচ্ছে না।তখন বললাম “আল্লাহর আযাব কে ভয় কর।এত বড় সাহস যে আমিনুর এর উপর ভর করে আমাকে রুকিয়াহ অফ করতে বলতেছিস।তোকে চিনতে ভুল করিনি” এই বললে ও হেসে দেয়।

তারপর গাল থেকে রক্ত বের করে আমাকে দেখায় আর ভয় দেয় যে রুকিয়াহ অফ না করলে রক্ত বের করবে এভাবে।আমি বলি “যা ইচ্ছা কর।রুকিয়াহ চলবে,কষ্ট তোর হবেই” এই বলে রুকিয়াহ করতে লাগলে একটা সময় বার বার আমার হাত চেপে ধরে,বুঝতে পারি আর সহ্য করতে পারছে না।তারপর একটা সময়ে চলে যায়।আমিনুর চোখ বুজে পড়ে এবং কিছুক্ষণ পর আমিনুর এর জ্ঞান ফেরে। এভাবেই চলতেছে।

তবে মাঝে মাঝে রুকিয়াহ এর সময় শুধু হাতই চেপে ধরে না,খুব এগেরসিভ হয়ে যায়।যেমন কয়েকদিন আগে আমাকে সুযোগ পেয়ে চড় মেরেছিল।

আমিনুর এই লাস্ট ১ সপ্তাহ আলহামদুলিল্লাহ প্রায় সুস্থ।মাঝে ১ দিন প্রব্লেম হয়েছিল।কারন সেদিন আমিনুর রুকিয়াহ এর গোসল করেছিল না। বাকি দিন গুলাতে রুকিয়াহ করলে মাঝে মাঝে জ্বীন প্রব্লেম করত।আর গাল দিয়ে রক্ত পড়াটা কমে গেছে।তবে একদম বন্ধ হয়নি।

অর্থাৎ এখন ভালো থাকার আসল উপায় হচ্ছে বরই পাতার রুকিয়াহ এর গোসল।আর আমার রুকিয়াহ।তবে এর মানে এই না যে বিপদ কেটে গেছে।প্রায়ই রাতে ওর ঘুম হয় না।।মাঝে মাঝে ঘুমালে আগের মত ওর নুপুরের শব্দে,ঘন্টার শব্দে ঘুম ভেংগে যায়,খাটের কাছে পা এর দিকে কেউ একজন(মাথা পুরোপুরি চুল দিয়ে ঢাকা) দাড়িয়ে বার বার খাটের দিকে উপূড় হয় আর ওঠে বা মশারির উপরে কেউ উপড় হয়ে আমিনুর এর দিকে তাকিয়ে থাকে ইত্যাদি৷

এবার আসি কেন এমন কালোজাদু হলোঃ

৭-৮ বছর আগে আমরা ফ্যামিলি সহ আমাদের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে বাডি ফিরতেছিলাম।বর্ষাকাল ছিল। তো রাস্তায় হাটার সময় পাশের এক পুকুর থেকে পানির স্রোত রাস্তার আরেকপাশে পড়তেছিল।হটাত পুকুর থেকে একটা ‘কই মাছ’ লাফিয়ে ওঠে এহং স্রোত বেয়ে রাস্তায় চলে আসে।

আমিনুর যেয়ে ওই কই মাছ ধরার চেষ্টা করে। ওর বয়স তখন ৭ বছরের মত।ক্লাস ১-২ তে পড়ত।ও বলে যে মাছটা ও পুষবে।আমার আব্বু তখন এক বাদামওয়ালা/বা ওরকম কারো কাছ থেকে একটা পলিথিন এ ওই মাছ টা নিয়ে দেয় আমিনুর কে।বাসায় আসার পর স্বভাবতই মাছটি কোনো একসময় খেয়ে ফেলা হয়।

এখন ওই জ্বীনদের ভাষ্য অনুযায়ী ওই মাছটি ছিল ওদের বোনের জাদু করা মাছ। বোন হচ্ছে সেই ধোকাবাজ যাকে আমরা জ্বীন হুজুর বলে জানতাম।আর তখন থেকেই সে আমিনুর এর পিছনে।

আর একটা কথা,,অনেকে মনে করেন ব্লাক ম্যাজিক শুধু মানুষেই করতে পারে।।এটা ভূল,ব্লাক ম্যাজিক মানুষ ও জ্বীন উভয়েই করতে পারে।এবং এটা ওদের অনেকের কাছে একটা ঐতিহ্য।

আর ইলুমিনাতি যে আছে সেটা ১০০%।যদিও ওরা এটাকে সাতান এর চিহ্ন বলে।কোনো কিছু লেখার শেষে  আমরা যেমন দাডি দেই,ওরা তেমন ওই চিহ্ন দেয়।আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা কেনো করো তো ওরা বলেছিল এটা ওদের সাতান এর প্রতীক,এটার দ্বারা ওরা কথাটার অনেক গুরুত্ব সেটা বোঝায়।   আমিনুর এর বুকে এখনো  ইলুমিনাতি এর চিহ্নটা আছে।যেটা প্রব্লেম এর সময় ফুলে ওঠে,লাল হয়ে ওঠে।

আর সবাইকে একটা পরামর্শ দিতে চাই,গ্রুপ এ অনেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা লিখে পোস্ট করেন,তারা প্লীজ রুকিয়াহ করাবেন।তাবীজ-কবচ নিয়ে আল্লাহর অভিশাপ আদায় করবেন না,এটা শিরক।এতে সাময়িক সুস্থতা লাভ করলেও আল্লাহর সাহায্য না থাকার কারনে প্রব্লেম আরো বাড়বে।আমরা তার ভুক্তভোগী বলেই বলছি।

 

 

শেষ পর্ব ও কিছু কথা

 

আলহামদুলিল্লাহ আমিনুর ভালো হয়ে গেছে আল্লাহর অশেষ রহমতে।

লাস্ট পর্বে জানিয়েছিলাম যে কিভাবে আমিনুর এই প্রব্লেম এ পড়ে। তো সর্বশেষ আমিনুর এর প্রব্লেম হচ্ছিল রাতের বেলায় ঘুমালে। সবাই ঘুমিয়ে গেলে আমিনুরকে ওরা জাগিয়ে দিত তারপর রুমের মধ্যে আমিনুর কে ভয় দেবার চেষ্টা করত।এভাবেই চলছিল, আবার গলা থেকে রক্তও পড়ত।

তো লকডাউন এর জন্য রাক্বী হুজুরও আসতে পারেননি।তাই আমি নিজে ওর রুকিয়াহ করতাম(রুকিয়াহ এর আয়াত গুলা কালেক্ট করেছিলাম) এবং ও নিজে অডিও শুনত।

তারপর রমজান মাস আসলে প্রথম কয়েকদিন রক্ত পড়া অফ হয়ে যায়।পরে পড়েছিল ১ দিন। যখনই রাতে ওর ঘুম ভেংগে যেত তখনই আমি রুকিয়াহ করাতাম। তারপর গোসল ও খাবার জন্য পানি পড়া শুরু করলাম।আলহামদুলিল্লাহ এভাবে আমিনুর দিন দিন সুস্থ হয়ে যাচ্ছিল খুব দ্রুত।

রুকিয়াহ সাপোর্ট বিডি-গ্রুপ এ পড়েছিলাম রাতে যদি জ্বীনে ডিস্টার্ব করে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয় তাহলে তখনই তাহাজ্জুদ পড়তে।এতে করে জ্বীন পরের দিন হয়ত আর ডাকবে না।মজার বিষয় হলো এটাই আমরা ফলো করি আর সত্যিই ২ দিন পর থেকে ওকে রাতেও আর ডিস্টার্ব করে না।এভাবে করে লাস্ট ২ সপ্তাহ ও খুব ভালো আছে।গতকাল রাক্বী হুজুর এসে ২ ঘন্টা রুকিয়াহ করলেও আমিনুর ছিল স্বাভাবিক। তাই আগামী ১ মাস একটু সতর্ক থাকলেই(মাসনুন দোয়া কালাম পড়া)

আলহামদুলিল্লাহ ১০০% শিওর হয়ে যাবো।

এবার আসি একটু গভীর কথায়। একটা সহিহ হাদীস পড়েছিলাম যে “মুমিনের জন্যে বিপদ ও কল্যানকর!” সত্যি কথা বলতে এই বিপদ আমাদের জন্য কতবড় কল্যানকর ছিল তা বলে বুঝানো যাবে না।

এই প্রব্লেম এর আগে আমি টুকটাক নামাজ পড়তাম,প্রব্লেম শুরু হলে প্রথমদিকে ভয়ে ঠিক মতো সালাত আদায় করা ছেড়ে দেই। পরে আবারও শুরু করি কিন্তু ইসলামকে ঠিক মতো বুঝতে পারিনি। এই বিপদই আমাকে রুকিয়াহ সম্পর্কে  জানতে ও শিখতে উদ্বুদ্ধ করে।যখন দেখতাম আমিনুর এর সমস্যা শুরু হয়েছে তখন ওকে সেফ করার জন্য সেই রুকিয়াহ এর আয়াত তেলাওয়াত করতাম।

রমজান মাস আসলে এই টান আরো বেড়ে যায়।যতবার এই বিপদ ভিন্নদিকে মোড় নিয়েছে আমরাও কিছু না কিছু শিখেছি। তারপর কালো জাদুর জন্য  গোসল ও খাবার পানি পড়া শিখলাম। আস্তে আস্তে বুঝলাম এসব করতে হলে নিজেকে সকল পাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে। সেভাবেই চলার চেষ্টা শুরু করলাম।আমিনুর ও আমার দেখা দেখে উদ্বুদ্ধ হলো! এ যেন আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা’র এক বিশেষ রহমত।

আমিনুর একটা অডিও শুনত ‘Muhammad Luhaidan ‘ এর। হটাত যেন ওনার ভয়েস এর প্রতিও আল্লাহ ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিল।এখন আর গান শোনা হয় না।প্রতিদিনই ওনার তেলাওয়াত শুনে শুনেই আমিনুর ঘুমায়।ওনার ২ মিনিট এর তেলাওয়াতও আমার ফোনে ডাউনলোড করা।

রমজান এর শেষ ১০ দিন আমরা ১ রাত ও ঘুমাইনি ইবাদত এর জন্য।বাকিটা আর না বলি…

কিছু কথা আবারও বলতে চাই অন্যদের সতর্ক ও সুবিধার জন্য।

বিপদে ধৈর্য্য হারা হবেন না।ফল মিষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ। প্যারানর্মাল প্রব্লেম এ কবিরাজ-তাবীজ বাদ দিন।রুকিয়াহ সম্পর্কে জানুন,গুগল করুন।কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক চিকিৎসা করুন,আল্লাহর সাহায্য অবশ্যই পাবেন ইনশাআল্লাহ।

কালো জাদু শুধু মানুষই না,জ্বীনেও করে।নিয়মিত সালাত আদায় করুন ও সকাল-সন্ধ্যা ৩ কূল, আয়াতুল কুরসী পড়ুন।

স্যাটানিক ধর্ম, ইলুমিনাতি অবশ্যই আছে।আপনি এখন ১০০ যুক্তি আনলেও আমি মানব না।কারন সত্যটাই এক্সপেরিয়েন্স করেছি।তাই বলব ইমানের সাথে থাকুন,এসব থেকে দূরে থাকুন।ব্লাক ম্যাজিককে হেলাফেলা নিয়েন না।

জ্বীনেরা মারাত্মক  লেভেলের ধোকাবাজ হয়।তাই তাদের থেকে কোনো ইনফরমেশন পেলে সেটাকে অথেনটিক হিসেবে  না নেওয়াই উত্তম।

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আপনাকে বোঝার জ্ঞান দিয়েছে তাই কখনো এই প্যারানর্মাল প্রব্লেম এর শিকার হলে মানসিক সমস্যা ও প্যারানর্মাল সমস্যার পার্থক্য নিজেই করার চেষ্টা করুন।কখনো যদি প্যারানর্মাল প্রব্লেম,মানসিক চিকিৎসার মাধ্যমে সলভ করার ট্রাই করেন তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তেমনি ভাবে মানসিক প্রব্লেম এর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে আমি সাজেস্ট করব রুকিয়াহ করার। এতে রোগী প্যারানর্মাল সমস্যায় আক্রান্ত নাকি মানসিক সমস্যায় সেটা পরিষ্কার হয়।

কখনো ভাবিনি এই বিপদই হবে হেদায়েত এর গল্প। তবে আপনারাও এই গল্পে যুক্ত। অত্যন্ত ভালো মনের কিছু মানুষ আর আপনাদের দোয়াতেই আজ আমার ভাই সুস্থ!

সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।

জাযাকাল্লাহ খাইরান

 

লেখা- আবদুর রহমান ইবনে আল-মামুন

 

( জ্বীনের কবল থেকে আমিনুলের বেরিয়ে আসার সত্যি ঘটনা আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।

পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

জ্বীনের কবল

সমাপ্ত”