পেত্নী_মাঝির_গল্প

পেত্নী_মাঝির_গল্প –

বিশাল বন।বনের শেষে গ্রাম।গ্রামের নাম চন্দনপাড়া।গ্রামে থাকত এককৃষকে।কৃষকের নাম রহিম।প্রতিদিন সন্ধ্যায় রহিম তার বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ি ফেরে।কিন্তু একদিন কাজ বেশি থাকার কারণে রহিম তার বন্ধুদের সঙ্গে ফিরল না।সে দেরি করে ফিরবে বলে বন্ধুদের বিদায় করে দিল।

অনেক রাত হয়ে গেছে।কিন্তু কৃষক এখনও বাড়ি ফেরেনি।কিষাণী চিন্তা করছে।সে রহিমের বন্ধুদের কাছে খোঁজ নিয়েছে।কিন্তু বন্ধুরা বলে,রহিম তো বলেছে কাজ বেশি আছে বলে বাড়ি ফিরতে দেরি হবে।

ওদিকে রহিম খুব ভয় পাচ্ছে।মাঠ থেকে রহিমের বাড়ি ফিরতে বটগাছ পড়ে।বটগাছ সাধারণত ভূতের আবাসস্থল হয়ে থাকে।রহিম তার বন্ধুদের কাছে শুনেছে রাতের বেলা সব ভূতগুলো বের হয়।

এর মধ্যে যারা রাত করে,তাদের সবাইকে ভূতগুলো ঘাড় মটকে দেয়। তখন ছিল শীতকাল।রহিম নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল ভূত-প্রেত দুনিয়ায় নেই।শুধু শুধু ভয় পেয়ে কাজ নেই।আল্লাহর নাম নিয়ে যাই।

ইনশাআল্লাহ।কিছুই হবেনা।এভাবে রহিম চলতে থাকল।মাঠ পার হতেই নদী।রাত অনেক হয়েছে।খেয়া নৌকা ঘাটে বাঁধা থাকলেও মাঝি নেই,কনকনে শীত। নদীর পাশ ঘেঁষে আছে ঝোপ।

ঝোপের মধ্যে বাঁশগুলো শনশন আওয়াজ করছে। গাছের পাতাগুলো ঝিরি ঝিরি হাওয়ায় নড়ছে।এর মধ্যে ভটভট ভটভট করে আওয়াজ আসছে। রহিম বুঝতে পারল এটা ইঞ্জিন-নৌকার আওয়াজ।কারণ সে তার বন্ধুদের সঙ্গে একদিন ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করে বনভোজনে গিয়েছিল।

রহিম দেখতে পেল একটি মেয়েসেই ইঞ্জিন নৌকা দিয়ে আসছে এখন রহিমের ভয় তিনগুণ বেড়ে গেল।কিন্তু রহিম মনে মনে ভাবল,রাতের বেলার এ আজব রহস্য সে দেখেই যাবে।

মেয়েটির পরনে বেনারশি শাড়ি এবংপায়ে নূপুর।সে ডাঙ্গায় উঠে আসতেই রহিমের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল।মেয়েটি বলল,চল।তোমায় ওই পাড়ে নামিয়ে দেই।তার গলা খুবই মধুর।রহিম কিছুক্ষণ ভেবে নিল।

সেচিন্তায় পড়ে গেল।কিছুক্ষণ ভেবে রহিম বলল,ঠিক আছে চল যাই।কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি হেসে দিল।মেয়েটি বলল,আমি প্রতি রাতে মানুষের জন্য অপেক্ষা করি।

কৃষক রহিম বলল,কেন? তুমি যাকে দেখছে সেকিন্তু মানুষ নয়,আত্মা।প্রতিরাতে মানুষের অপেক্ষা করি।রাতে মানুষ দেখা যায়না।কিন্তু আজ মানুষ পেয়েছি।নৌকাটি ততক্ষণে রহিমের গন্তব্য স্থানে এসে পড়েছিল।

রহিম নেমেই দেখতে পেল মেয়েটি নেই।রহিম চলতে থাকল।কিন্তু সেদেখল মেয়েটি তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে।রহিম জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।যখন জ্ঞান ফিরে তখন দেখে নিজের ঘরে শুয়ে আছে কিষাণী।কিন্তুসবকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও রহিমের ভয় কমেনি।

 

 

{ আরো পড়ুন –ভুতুড়ে তাল গাছ 

 

( পেত্নী_মাঝির_গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।

পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

পেত্নী_মাঝির_গল্প

সমাপ্ত