শশ্মান ঘাট – ভয়ানক এক ভৌতিক ঘটনা

শশ্মান ঘাট –

লেখিকা_ডালিয়া

 

আমার নাম সিয়াম। আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি। আমি মধ্যবিত্ত ঘরের একজন ছেলে। আমার বাসা থেকে কলেজ অনেক দূরে প্রতিদিন এতো এতো ভাড়া দিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছিল না।

তাই ঠিক করলাম কলেজের ওইদিকে একটা বাসা ভাড়া নেই। বাড়িতে আমি একাই থাকতাম। মধ্যবিত্ত হওয়ায় ৩ – ৪ টা টিউশনি করাই। আজ ৪ দিন ধরে প্রচুর বৃষ্টি নামছে রাস্তা ঘাটে অনেক পানি উঠেছে ।

৪ দিন পড়াতে যাইনি আজ না গেলে আবার বেতন কেটে রাখবে তাই বের হয়ে পড়ি পড়াতে। ৩ টা বাড়ি কাছেই ছিল ওদের পড়ানো শেষ করে ৪ নাম্বার বাড়িতে আর যেতে ইচ্ছে করছিল না।

তারপরও গেলাম পড়ানো শেষ হলো রাত ৮টা বাজে। বাহিড়ে দেখলাম বৃষ্টি তেমন নেই। এদিকে গাড়িও পাচ্ছিলাম না।

তাই ভাবলাম আন্টি বলছিল ওনাদের বাসার পিছন দিয়েও নাকি শটকাট যাওয়া যায়। তাই আমি ওইখান দিয়েই যাচ্ছিলাম। রাস্তাটা কেমন ওলিগলি ছিল। তারপর এক খোলা আকাশের নিচ দিয়ে আমি একা হেঁটে যাচ্ছি।

বৃষ্টি পড়ছে বলে ফোনটা বের করিনি চারপাশে অনেক অন্ধকার। হঠাৎ জোরে বৃষ্টি আাসায় আমি কোনদিকে যাবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।

দেখলাম সামনে একটা ছাউনি আর ছাউনির নিচে শুধু কাঠ রাখা ছিল। আমি দৌঁড়ে সেখানে উঠে পড়ি। জোরে বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকাতেই চারপাশ আলোয় ভরে যায়।

আমি খেয়াল করি আমি কোনো শশ্মান ঘাটে দাঁড়িয়ে আছি। আমি তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে হোচট খেয়ে পড়ে যাই। উঠার সময় মনে হলো কে জেনো সামনে দাঁড়িয়ে ছিল।

আমি উঠে দাঁড়িয়ে দৌঁড় দিতে যাবো ঠিক তখনই কেউ আমার হাত, ধরে পেছনে তাকাতেই

দেখি কোন কালো অবয়ব তার চোখ গুলো আগুনের মতো জ্বলজ্বল করছে।

এমনটা দেখে আমি জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলার মতো। আমি ঝাঁড়ি দিয়ে হাতটা সরিয়ে অনেক জোরে এক দৌঁড় দেই সামনে একটা গাড়ি পাই।

ওই গাড়িতে উঠে পড়ি।বাসায় যাওয়ার পর ভয়ে আমার অনেক জ্বর আসে।রাতে ঘুমাচ্ছিলাম পায়ে কোনো গরম হাত পড়ায় আমার ঘুম ভাঙে উঠে দেখি সেই কালো অবয়বটা আমার দিকে এগিয়ে আসে।

আমি দৌড়দি দৌড়াতে দৌড়াতে দেখি আমি সেই শশ্মান ঘাটে চলে এসেছি।শশ্মান ঘাটে কাউকে পোড়ানো হচ্ছে তার চারপাশ দিয়ে ঘেরা সেই কালো অবয়ব গুলো।

একটা কালো অবয়বটা আমার দিকে এগিয়ে আসে।হঠাৎ করে আমার হাতটা ধরে টানতে থাকে।

আমি জোরে চিৎকার দেই আর ঘুম ভেঙে যায়। আমি বিছানায় বসে ভাবতে থাকি এগুলো কী সত্যি নাকি সপ্ন।আজকেও অনেক বৃষ্টি তাই আর পড়াতে যাই নাই।

সারাদিন পড়াশোনা করেই কাটালাম।রাতে ঘুমিয়ে পড়লাম।রুমে কোনো কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দে ঘুম ভাঙে আমি রাতে রুমের লাইট জ্বালিয়েই ঘুমাই।

আমি চোখ বন্ধ করা অবস্থায় উঠে বসি তাকিয়েই দেখি।আমার বিছানা চারপাশে কালো অবয়ব গুলো দাঁড়িয়ে আছে।

হঠাৎ আমি শূন্য ভাসতে থাকি।অবয়ব গুলোও ভাসছে ভয়ে আমার মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না।অবয়ব গুলো আমার গলা চেপে ধরে আমি ছটফট করছি।

ঠিক সেই সময় ফজরের আযান দেয়।কালো অবয়ব গুলো অদৃশ্য হয়ে যায় আর আমি নিচে পরে যাই।

অনেক ব্যাথা পেয়েছি।ওযু করে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়েই হুজুরের কাছে যাই। সে সব শুনে আমাকে একটা তাবিজ দেয়। আবার বাসায় এসে পানিতে সূরা পরে বাসার চারপাশে ছিটিয়ে দেয়।

হুজুর সেই শশ্মান ঘাটেও গিয়েছিল আমি তার কাছে জিজ্ঞেস করেছিলাম কী হয়েছে হুজুুর।সে বলল কিছু কথা রহস্যই থাক।

আর তুমি ওই রাস্তা দিয়ে কখনো যেও না।তারপর সব ঠিক হয়ে যায়।

তারপর আমি কখনো এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করিনি। কিন্তু মাঝে মাঝেই শুনতে পাওয়া যায় শশ্মান ঘাট এর পাশ দিয়ে রাত এ কেউ যেতে লাগলে অদ্ভুত সব ঘটনার শিকার হয়। যদিও ওই অঞ্চলের মানুষ এখন আর কেউ খুব বিপদে পড়া ছাড়া শশ্মান ঘাট এর রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন না।  গ্রামের লোকদের ধারণা শশ্মান ঘাটটি অনেক পুরোনো হওয়ায় এমন ভৌতিক সমস্যা গুলা হয় বলে ধারণা করা হয়। আর বিগতো কয়েক বছর এ ওই শশ্মান ঘাট এ কাউকে পোড়ানো হয়নি।

 

 

{ আরো পড়ুন – আমার আরো লাশ দরকার – ভয়ানক পেত্নীর সত্যি ঘটনা

 

(  শশ্মান ঘাট – ভয়ানক এক ভৌতিক ঘটনা আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী পর্বের জন্য আমাদের সাথেই থাকুন । ধন্যবাদ।)

 

শশ্মান ঘাট – ভয়ানক এক ভৌতিক ঘটনা

” সমাপ্ত”