তিতলি – ছোট গল্প

তিতলি

লেখকঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

 

আমি হিন্দু পরিবারের মেয়ে।

আমার ছোট বোন যখন জন্মায়, আমার ঠাকুমা অনেক খুশি হয়। কারণ আমাদের বংশে ছেলে সংখ্যা বেশি, আর মেয়ে আমি আর আমার ছোট বোন। সে হিসেবে আমাদের দু-বোনের বেশ আদর।

তখন আমার বোনের বয়স ১১ বছর। হঠাত তার ডায়রিয়া হয়। কোনো ডাক্তার দেখিয়েও লাভ হচ্ছিলো না। কেউই ভাল করতে পারছিলো না। অবশেষ এক কবিরাজ এর কাছে যাওয়া হয়। ওই কবিরাজ আমার বোনকে দেখে বলে, এই অসুখ ভাল হবার নয়। এজন্যই কোন ডাক্তার ভাল করতে পারে নি।”

তারপর ঐ কবিরাজ ঠাকুমাকে দূরে ডেকে নিয়ে বলে, “কিছু দিন আগে আমাবস্যা রাত গেছে, তখন কি তিতলি রাতে বাইরে বের হয়েছিলো?”

ঠাকুমা উত্তর দেন, “হ্যাঁ, তখন অনেক গরম থাকায় ওরা সব ভাইবোনেরা মিলে বাড়ির উঠানে বশে গল্প করছিলো সেরাতে। কেননো?”

তখন কবিরাজ বললো, “এইখানে হলো মূল সমস্যা। ওখান দিয়ে একটা কালো ছায়া যাচ্ছিলো, ঠিক ওই সময়ই তিতলি ওটার শরীরে পা দেয়, আর মজা করে হেসে সবাইকে দেখায়। এখন ওই ছায়াটা তার প্রতিশোধ নিচ্ছে এভাবে। ওই টা ছায়া ছিলোনা, ছিলো পিচাস। আর ও তিতলি কে কখনোই ছাড়বেনা। আমিও চেষ্টা করেছি, ভাল করতে পারবোনা। আমাকে মাফ করেন অনেক দেরি করে ফেলছেন এইখানে আনতে। তিতলি ভিতর এখন হাড় ছাড়া যে কিছুই নাই, সব শোষণ করা শেষ হয়েগেছে। তাই ভালো, ওকে বাড়ি নিয়া যান।”

ঠাকুমা তাই শুনে সারাদিন রাত চোখ ভেজাতো। অথচ কাউকে কিছুই বলতোনা। ওদিকে তিতলির শরীর খারাপ দিনকে দিন বেড়েই চলছিলো। তারপর হঠাৎ একদিন আমাদের সবাইকে রেখে না ফেরার দেশে চলে গেলো মেয়েটা। আশ্চর্যজনকভাবে ওইদিনও আমাবস্যা ছিলো।

তিতলি মারা যাওয়ার কিছু দিন পর আমাদের সবাইকে ঠাকুমা কবিরাজ এর বলা কথাগুলো জানায়। সাথে এও বলে, আমরা কেউ যেনো কখনো আমাবস্যার রাতে বাইরে বের না হই। তারপর থেকে আমরা আর আমাবস্যার রাতে বাইরে বের হতাম না।

 

{ আরো পড়ুন – ভূতের গল্প

 

( তিতলি – ছোট গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।

পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

 

তিতলি

” সমাপ্ত”