রিক্সা রাইড – ছোট গল্প

রিক্সা রাইড

লেখকঃ তানভীর আহমেদ তূর্য

 

০৭/০৩/২০১৫

শনিবার, রাত ১ টা বেজে ৩০ মিনিট

সৌরভের ফোন। ট্রেন ময়মনসিংহ স্টেশনে আসতে আরো মিনিট চল্লিশ লাগবে। আবদার, আমরা যেনো ওকে রিসিভ করে নিয়ে আসি। একা একা বেচারা বেশ ভয় পায় রাতে। সন্ধ্যায় স্যারের ফোন, পরদিন বিশেষ ক্লাস আছে, আজই ফিরতে হবে; হলোও তাই। না ফিরে উপায় কি, স্যারের অতো বড় চোখ-রাঙানি দেখার চেয়ে বোধহয় ভূতেদের চোখ রাঙানি দেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করছিলো সৌরভ।

এসব নিয়েই হাসাহাসি করতে করতে কিছুক্ষণ পর বাসা থেকে নামলাম, বাসা না ঠিক, মেস, স্টুডেন্ট মেস। আমি তূর্য, সাথে রায়হান আর শরৎ। নেমে একটু হাটতেই একটা রিক্সা দেখতে পেলাম। বয়ষ্ক করে লোকটা, রিক্সার উপরেই ঘুমাচ্ছিলো।

অল্প শব্দে ডাকলাম, ‘মামা স্টেশনে যাবেন?’, ধীরে ধীরে নিজের সিটে বসলেন তিনি। রিক্সা ঘুড়ালেন। বুঝলাম, মামার সম্মতি আছে। উঠে বসলাম। আমার উপরের দিকে রায়হান আর ডান পাশে শরৎ।

আজ শহরটা ভীষণ অন্ধকার। হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসের মেয়েরা কান্নার পর মন খারাপ করে অন্ধকার মুখে বসে থাকলে যেমনটা লাগে, ময়মনসিংহ নগরীটা আজ ঠিক তেমন। শেষ ক’দিন ধরেই শহরটা কাঁদছিলো, আজ তো সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ এর ছিটেফোঁটাও নেই। তবে মামা চলছেন তার আপন গতিতে। ২০১৫ তে এসেও রিক্সায় লাইটের পরিবর্তে হ্যারিকেন দেখে অদ্ভুত লাগলো। সে যাকগে।

রিক্সায় বসে বসে গল্প করছিলাম আমরা। নানা গল্প। গল্পের সাথে বৃষ্টিভেজা বাতাসে নদীর তীর ঘেষে চলা রাস্তা দিয়ে রিক্সা-রাইড, এক অন্যরকম অনুভূতি। মিনিট বিশেক পর পৌঁছুলাম স্টেশনে। মামাকে কিছু সম্মানী দিয়ে এগুচ্ছি রেলওয়ে গেইটের দিকে। দু-কদম ফেলতেই ফজরের আযান ভেসে আসলো কানে… মানে!

পেছনে ফিরলাম, মামা নেই, নেই কোনো রিক্সাও। ফোন দেখলাম, সৌরভের চব্বিশটা কল মিসড।

 

{ আরো পড়ুন – সত্য ঘটনা

 

( রিক্সা রাইড – ছোট গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।

পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

রিক্সা রাইড

” সমাপ্ত”