আত্মকথা – ভয়ানক অভিশপ্ত ভূতের গল্প

আত্মকথা

পর্ব-

জানিস নিলু আব্বার মৃত্যু’টা আমার কাছে মোটেও  স্বাভাবিক মনে হয়নি। একটা জলজ্যান্ত মানুষ রাতে খেয়ে দেয়ে ঘুমোলো আর সকালে উঠে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হলো। ভাবতে পারিস!”

মিলি দক্ষিণের জানালা দিয়ে দূরের বিলে শাপলা দেখতে দেখতে বলল। নিলু ড্যাব-ড্যাব করে তাকিয়ে  আছে মিলির দিকে। নিলু বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে বলল, আফা আপনি তো শহরে লেখাপড়া করছেন। আপনের অনেক বুদ্ধি। একটা হিসাব কষে বের করেন তো! আপনের আব্বায় মারা যাওনে কার বেশি লাভ?

মিলি নিলুর দিকে তাকিয়ে বলল,  কার লাভ! লাভ বলতে তো মতি মামার। আব্বা মারা যাবার পর তিনিই এই বিশাল সম্পত্তি দেখাশুনা করছেন।  আমার দাদি-দাদার একমাত্র সন্তান ছিলেন আমার বাবা। আমিও বাবার  একমাত্র সন্তান।

নিলু, তোর কথাটা আমি প্রায় ভাবি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতে পারিনা এমন সাদা-মাটা একটা লোক আব্বা কে মারতে পারে।

নিলু দাঁড়িয়ে বলল, আইজ আসি গো আফা। মায়ের শরীর ভালা না। আওনের সময়  মায়ের কপালে হাত দিয়া দেখি প্রচন্ড তাপ শরীরে।  মনটা ধরফর ধরফর করতাছে ভালো লাগতাছে না। নিলু চলে গেল। মিলি জানালা দিয়ে তাকিয়েই ফিসফিস  করে বলল,  বারো বছরের একটা মেয়ে লাভ ক্ষতির হিসেব বুঝে অথচ আমি কতটা বোকায় রয়ে গেলাম।

আব্বার শোকে মা পাথর হয়ে গেছে গত একমাস যাবত চুপ হয়ে আছে। কারও সাথে কথা বলছে নাহ।  এদিকে মতি মামা তার ছেলে আর বউকে নিয়ে এ বাড়িতে তাদের আসন পাকাপোক্ত করেছেন।

বারান্দা থেকে  কিছু ভাঙার শব্দ পেয়ে মিলি দৌড়ে গিয়ে বারান্দার দেয়াল ধরে দাঁড়াল। মতি মামার গুনধর ছেলে চায়ের কাপ ফ্লোরে ফেলে দিয়ে চেচিয়ে বলছে, এইটা চা হয়েছে।  এর থেকে তো আমাদের পাড়ার দোকানের চা ভালো। মামি রাগি স্বরে বললেন,  আরে হতছাড়া এইটা চা না। এইটা কফি। আর কফি খেতে এরকমই।  তাদের কান্ড দেখে আমি মিটমিট করে হাসছি। মামি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, কিরে মিলি তুই এখনো তৈরী হসনি। আজকে তোকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে। গতকাল তোর মামা কি বলল শুনতে পাসনি!

আমি মামির দিকে তাকিয়ে  বললাম, তোমরা কি পাগল হয়েছো মামি! মা এখনো ঠিকমত সুস্থ্য হয়নি। আব্বার মৃত্যুর পরে আমি নিজেকেও  সামলিয়ে নিতে পারছি নাহ। এর মধ্যেই তোমরা আমার বিয়ের তোড়জোড় করছো। কেন বলো তো?

মামি কিছুটা ভ্যাবাচেকা  হয়ে বলল, তার মানে তুই  কি বলতে চাস! আমরা তোদের ভালো চাইনা।  আসুক, আসুক তোর মামা। তাকেই জিজ্ঞেস করব।আমি জানি। আমি তৈরী  না হলে বড় রকমের অশান্তি নেমে আসবে এ বাড়িতে।  তাই  কিছু না বলেই তৈরী হতে গেলাম।

 

{ আরো পড়ুন – অভিশপ্ত কবরস্থান – ভয়ানক অভিশপ্ত কবরস্থানের গল্প!

 

প্রায় এক ঘন্টা ধরে বসে আছি পাত্রপক্ষের আশার নামই নেই।  মতি মামা কন্টিনিউ তাদের ফোন করেই যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পাত্রের ভাই ফোন রিসিভ করে বলল, তার ভাই অসুস্থ হয়ে গেছে,  তাই তারা আসতে পারবে নাহ। মামি দাঁড়িয়ে ছিলেন কথাটা শুনার পর ধপ করে সোফায় বসে পরলেন। মতি মামা আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছেন।

সবকিছু নিশ্চুপ।  হঠাৎ  মা এসে বললেন,  মিলি ঘরে আয়। আমি চমকে উঠে মার দিকে তাকালাম।  মা তার রুমে চলে গেল।  সবায় মার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি উঠে মার রুমে এলাম।

মা লাল রঙের  একটা  বৃত্ত আকিয়েছেন ফ্লোরে।  আমি সোফায় বসলাম। মা বৃত্তের মাঝখানে বসলেন। তার সামনে তিনটা স্টার আঁকানো।  তিনটা মোমবাতি জ্বালিয়ে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,  মিলি তুমি প্যারানরমালে বিশ্বাস করো? আমার শরীরে একটা অজানা শিহরন বয়ে গেল। আমি না সূচক মাথা নাড়ালাম।  বাহিরে  মতি মামা ও তার স্ত্রী  ফিসফিস করছে। সম্ভবত তারা জানার চেষ্টা করছে রুমের ভেতর মা মেয়ে কি করছি।

মা গম্ভীর গলায় বললেন,  শুনো মিলি।  পৃথিবীতে ভালো যেমন আছে মন্দও তেমন আছে। জিন যেমন আছে  মানুষও তেমন আছে। বিঙ্গানের বাহিরেও অনেক  ঘটনা রয়েছে যা বিঙ্গাণ সমাধান দিতে পারে নাহ। আমি জিনকে হাজির করাবো তুমি শুনবে তোমার বাবার কি হয়েছিল।  ভয়ে আমার শরীর বরফ হয়ে যাচ্ছে। আমি এই প্রথম আমার মাকে অন্যরূপে দেখছি। একবার মনে হচ্ছে আমার মা পুরো পাগল হয়ে গেছে, আবার মন চাইছে দেখি না কি হয়।

মা চোখ বন্ধ করলেন।  কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটা পুরুষ কন্ঠে বললেন, আসসালামু ওয়ালাইকুম। আমি হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম।  তিনি আবারও সালাম দিলেন।  আমি সালামের উত্তর দিলাম। তিনি বললেন,  তুই তো বড় হয়ে গেছিস।  তোকে সেই ছোট বেলায় দেখেছিলাম। বল কি জানতে চাস? আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,  আমার আব্বাকে  কে মেরেছে?

তিনি পুরুষ কন্ঠেই বললেন,  তোর মা। আমি আঁতকে উঠলাম। বললাম,  কিভাবে? তিনি বলতে লাগলেন,  তোর মায়ের এক বন্ধু আছে।

কলেজে থাকতে তাদের পরিচয়।  তোর মাকে সে খুব পছন্দ করতো। কিন্তু তোর মা সম্পর্কটাকে শুধু বন্ধুর মধ্যেই রাখতে চেয়েছিল।  তোর বাবার সাথে বিয়ে হবার পর তোর মা এই বাড়িতে আসে। তারপর তাদের আর দেখা হয়নি। তোর বাবার মৃত্যুর একমাস আগে তার সাথে তোর মায়ের আবার দেখা হয়। সে তোর মায়ের প্রতি এতোটাই প্রভাবিত ছিলো যে তাকে দেখা মাত্রই  আবার বাসনা জন্ম নেয়। তোদের পারিবারিক ডাক্তার কে সে হাত করে নেয়।

সেদিন তোর বাবা ডাক্তার কে প্রেশার মাপার জন্য আসতে বলেছিলেন।   কিন্তু ডাক্তার তাকে ইনজেকশন দেয়।  যার মধ্যে ছিল শুধু বায়ু। তোর বাবা ঘুমিয়ে পরেন চিরনিদ্রায়।

আমি স্তব্ধ হয়ে বললাম,  তাহলে আপনি বললেন কেন আমার মা মেরেছে? তিনি শক্ত গলায় বললেন, কারণ তোর মা যদি  তাকে এ বাড়িতে  প্রশ্রয় না দিতো তাহলে সে কখনোই এ ঘটনা  ঘটাতে পারতো নাহ্। দরজার ওপাশ থেকে  মতি মামার গলার স্বর ভেসে আসছে। তিনি দরজায় ধাক্কা দিয়ে বলছেন, মিলি দরজা খোল। তোর মা কথা বলছে দেখবি আয়। সে সুস্থ্য। মিলি শুনতে পাচ্ছিস দরজা খোল। মা হাসতে লাগলেন। সে ভয়ংকর রকমের হাসি।  আমি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুললাম।

মতি মামা আমার হাত ধরে টানতে টানতে মার রুমে নিয়ে  আসল। মামি মাকে জড়িয়ে ধরে আছেন। আমি পিছনে তাকিয়ে দেখলাম যে রুমে আমি ছিলাম সেটা আমারই রুম। মা আমায় কাছে ডাকলেন। আমি মার সামনে স্থির হয়ে দাড়িয়ে আছি। একটু আগে আমার সাথে যা ঘটেছে তার ঘোর এখনো আমার মস্তিষ্ক থেকে যায়নি। মা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছেন। আমি কাউকে কিছু  বলতে পারছি নাহ চুপ  হয়ে আছি।

আমাদের পারিবারিক ডাক্তার অরুন মিত্র এসেছেন।  মা’র চিকিৎসা তিনিই করছেন। তিনি প্রেশার মেপে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,  বুঝলে মিলি দিদি কিন্তু সুস্থ হয়েছেন। তারমানে এই নয় যে বিপদ কেটে গেছে। খেয়াল রাখতে হবে যেন দিদি আর মানসিক চাপ না পান। অরুন মিত্র চলে যাচ্ছেন।

আমি প্রধান দরজায়  পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললাম, কাকু! আসাদ নামের কাউকে চিনেন আপনি? তিনি পেশায় একজন শিক্ষক।  অরুণ মিত্র,  আমার দিকে  তাকিয়ে  একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বললেন,  নাতো মিলি! কেন কিছু হয়েছে।  আমি না সূচক মাথা নাড়ালাম।  তিনি চলে গেলেন।

আজকে নিলু আসে নি। আমি নিলুর বাড়িতে যাবো ভাবছি।  মেয়েটা বলছিল তার মায়ের শরীর খুব খারাপ। মতি মামা আজ অফিস যাননি। মামি বারান্দায় বসে মটরশুঁটির খোসা ছাড়াচ্ছেন। হুট করে রিজু বাড়িতে ঢুকল। তার পাশে লাল জামদানী শাড়ি পরা একটা মেয়ে। মামি তাকে দেখে উঠে পরলেন। চেচিয়ে বললেন, মেয়েটি কে রিজু! রিজুর সোজা-সাপ্টা উত্তর, আমার বৌ।

মামি কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন,  হতছাড়া! বিয়ে করলি আমাদের  একবার জানানোর প্রয়োজন বোধ করলি নাহ।  মতি মামা রাগের মাথায় ঠাটিয়ে দুটো চড় মারলেন। মা ছাঁদে ছিলেন।  তিনি নিচে নেমে এসে বললেন, যা হবার তা তো হয়েছে।  নতুন বৌকে ঘরে তুলে নাও। মামা-মামী দুজনেই চুপচাপ চলে গেলেন রুমে। রিজু তার বৌকে নিয়ে  তার রুমে গেল।

নিলুর কাছে আর যাওয়া হলো না। নতুন বৌকে দেখতে রিজুর রুমে গেলাম। রিজু নেই।  মেয়েটি খাটের উপর বসে আছে। আমায় দেখে বলল, এসো মিলি বসো। আমার নাম ধরে ডাকায় আমি অবাক হইনি। হয়তো রিজু তাকে আমার কথা বলেছে। আমি তার পাশে বসে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার নাম কি? সে মৃদু হেসে বলল, আমার নাম রোকেয়া।

রোকেয়া  আয়নার সামনে গিয়ে বলল, মিলি। তুমি কি আমায় চিনতে পেরেছো। আমি আয়নায় রোকেয়ার প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে বললাম,  আগে কি আমাদের দেখা হয়েছিল!  রোকেয়া আমার দিকে ফিরে বলল, অচিন্তপুরের কথা মনে আছে মিলি।

আমি রোকেয়ার প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে আছি।  তার প্রতিবিম্ব আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। আর রোকেয়া আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলছে। আমি না সূচক মাথা নাড়ালাম।  রোকেয়া আমার পাশে এসে বসল। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, কি সুখে বাঁধিনু সই তোরে। আমার এই মায়ার শহরে। আমি মৃদুস্বরে বললাম, ভালো কবিতা বলোতো তুমি। রিজু  হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকল।  আমি ঘর থেকে বের হয়ে আমার ঘরে আসলাম।

মা আমার ঘরে এসে আমার পাশে বসলেন। মৃদুস্বরে বললেন,  মিলি! আগামীকাল  তোমায় দেখতে আসবে।  আমি অস্পষ্ট স্বরে বললাম, কে? পাত্রপক্ষ।  আমি মার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম,  আমাকে একটু একা থাকতে দাও মা। আমার কিছুই ভালো লাগছে নাহ। মা উঠে চলে যাচ্ছেন। আমি ডাক দিয়ে বললাম,  মা। অচিন্তপুরে আমাদের কে আছে?

মা কিছুটা  হকচকিয়ে গেলেন। আমতা আমতা করে বললেন, তোমার দাদার বাড়ি। আমি অবাক হয়ে বললাম, তাহলে আমরা সেখানে যাই না কেন?

মা কথা বাড়ালেন নাহ। বললেন, তোমায় পরে বলবো মিলি। আমি একটা কাজে বাহিরে যাচ্ছি। তুমি নিলুর খোঁজ নাও তো সে আসছে না কেন? আমার কন্ঠে জড়তা। চোখে  আড়ষ্টতার ছাপ। আমি জানালার দিকে মুখ ফিরিয়ে চুপ করে রইলাম। মা চলে গেলেন।

নিলু সন্ধ্যায় আসলো। তার হাতে অনেকগুলো কদমফুল। হাস্যোজ্জ্বল চেহারা। আমি জিজ্ঞেস করলাম,  তোর মা কেমন আছে নিলু? ভালা আছে আফা। আইজ মা আর আমি ঘুরতে গেছিলাম।  রাস্তায় এক সাহেবের সাথে দেখা। সে আমাদের সামনে এসে বলে আপনাদের একটা ছবি উঠায়। মা তো ভয় পাইছে। সাহেব কইলো ভয় পাওনের কিছু নাই।

পরে সে আমাগো অনেক ছবি উঠায়ছে। নিলু কদমফুল গুলো আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, আফা আমাগো গাছের কদমফুল।  আমি ফুল গুলো নিলাম। নিলু ফিসফিস করে বলল, রিজু ভাই নাকি বিয়া করছে। কথাটা হাচানি!

আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালাম। হেয় তো নিজেই কাজকাম করে না। বৌরে কি খাওয়াইবো! আমি আর নিলু দু’জনে হাসলাম। নয়া বৌরে কাল দেহুম আইজ যাই। মায়ে চিন্তা  করবো।নিলু চলে গেল।

রাত তিনটায় আমার ঘুম ভেঙে যায়। পানির পিপাসা পেয়েছে।  পানি ঘরে নেই।  ঘর থেকে বের হয়ে ড্রয়িংরুমের দিকে যেতেই  শুনতে পাই কিছু অদ্ভুত শব্দ। মনে হচ্ছে কেউ বিড়বিড় করে মন্ত্র উচ্চারণ করছে।  আমি এক পা দুপা করে মার রুমের দরজায় আসলাম। ড্রিম লাইটের আলো স্পষ্ট দেখতে পেলাম  মা ঘুমাচ্ছেন। তাহলে শব্দটা আসছে কোথা থেকে।  মতি মামার রুমে এসে আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেল।

মতি মামা পুরো  বিবস্ত্র অবস্থায় একটা লাল বৃত্তের মধ্যে  বসে মন্ত্র উচ্চারণ করছেন। তার পাশে আরেকটা বৃত্তে রোকেয়া দাঁড়িয়ে আছে।  রোকেয়ার চোখ আগুনের শিখার মতো  জ্বলজ্বল করছে। পেছন থেকে কেউ  আমার মাথায়  প্রচন্ড জোরে আঘাত করল। আমি ফ্লোরে পরে গেলাম। আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে।  মতি মামার গলার স্বর ভেসে আসছে কানে। শব্দ তীব্র গতিতে ভেসে আসছে আমার কানে। আমি ধীরে ধীরে অন্ধকারে হারিয়ে গেলাম।

 

(আত্মকথা – ভয়ানক অভিশপ্ত ভূতের গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। পরবর্তী পর্বের জন্য আমাদের সাথেই থাকুন । ধন্যবাদ।)