ভূতের রুই মাছ খাওয়া – সত্য ঘটনা

ভূতের রুই মাছ খাওয়া –
ঘটনা টি ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের কোন এক দিন আমি বাজার করে বাড়ি ফিরছিলাম। আমার এখনো মনে আছে লাল শাক এবং একটি বড় রুই মাছ নিয়ে রাত আনুমানিক ৯টা ১০টার দিকে যাচ্ছি।
গ্রামের রাস্তা কনকনে শীতের রাত নিরিবিলি পথ। আশেপাশে কেউ নেই। ঝি ঝি পোকার ডাক,, আমার বাড়ি থেকে বাজার ছিল আনুমানিক ১কিলো ত হবে। আমি যখন অর্ধেক পথ চলে আসি তখন দেখি একটা কালো বিড়াল আমার সামনে দিয়ে চলে যায়। তার কিছুক্ষণ পর একটা বোরকা পড়া মহিলা এসে আমার কাছে থালা নিয়ে ভিক্ষা চায়।
আমি ১০টাকা দি কিন্তু সে কিছু তেই টাকা নিয়ে নারাজ। মহিলা টি সরাসরি আমার কাছে বলে তোর ব্যাগের মাছ দে। এটা শুনে আমি কিছু টা রেগে যাই। আমি কিছু না বলে হাটা শুরু করি কিছু দূর যাওয়ার পর একটা ছোট্ট ছেলে এসে আমার সামনে দাঁড়ায় আর বলে মাছ দে। মাছ দে মাছ দে। আমি কিছু টা আতংকিত হয়ে পড়ি। আমি ছেলে টাকে এড়িয়ে হাটা শুরু করি।
তারপর আমি বাড়ির কাছাকাছি যখন চলে আসে তখন দেখি রাস্তার ২পাশে ইয়া বড় একটা সাদা পোশাকের মানুষের মত ২পা ২দিকে দিয়ে বসে আছে এটা দেখে আমি বুঝে ফেলি যে আজ কিছু একটা হবে আমার সাথে। সেই সাদা পোশাকে মত জিনিস টা হুংকার দিয়ে বলে মাছ দিয়ে যা না হয় আমার পা এর তলে দিয়ে যাহ। বন্ধুরা আমি অনেক সাহসী একজন মানুষ এবং নাছোড়বান্দা আমি কিছু তেই মাছ দিতে রাজি নই কারন আমি অনেক স্বাদ করে মাছ টা কিনেছি।
এদিকে যদি মাছ না দি তাহলে ভূত এর পা নীচে দিয়ে ফেলে পিষে মারবে সেটা আমার জানা আছে।
অগত্যা আমি উলটা পথে হাটা শুরু করলাম আবার বাজারের উদ্দ্যেশ্য। কিন্ত্ আমার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল তা কিছুক্ষণ পর টের পাই কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি একটা লাল শাড়ি পড়ে যেন একটা কলা গাছের মত কি দাড়িয়ে আছে।
যখন সেটির কাছে চলে আসি দেখি একটা মেয়ে ঘোমটা দেয়া। আমি ভাবলাম হয়তো কোন মেয়ে বাড়ি চিনছে না বা কোন বিপদে পড়েছে আমি জিজ্ঞেস করি আপনি কে? এত রাতে এখানে কি করেন? কোন বাড়ি আপনাদের। মেয়েটি হাত দিয়ে ইশারা করে সামনে বাজারের দিকে। তো আমিও হাটতে থাকে মেয়েটি আমার পিছন পিছন হাটতে থাকে।
মেয়েটি আমাকে পথিমধ্যে বললো তার একা যেতে ভয় করসে তাই সে কারো জন্যে অপেক্ষা করছিল কেউ রাস্তা দিয়ে গেলে তার সাথে যাবে। তাই আমিও মেয়েটিকে আমার পিছন আসতে বলি। একদিকে আমার ও কিছুটা ভয় কাটবে এই ভেবে।
কিন্তু কিছুদূর হাটার পর আমার মনে হচ্ছে আমার ব্যাগ টা অনেক ভারী হয়ে গেসে। আমি কিছু তেই সেটা টেনে নিতে পারছি না..
কিন্তু কিছুদূর হাটার পর আমার মনে হচ্ছে আমার ব্যাগ টা অনেক ভারী হয়ে গেসে।
আমি কিছু তেই সেটা টেনে নিতে পারছি না..তো আমি পিছন ফিরে দেখি সে মেয়েটি নেই এবং আমার ব্যাগের ভিতর থেকে খস খস কিসের শব্দ আসে। আমি ব্যাগ টি খুলে যা দেখি তা দেখার জন্য আমি কখনো প্রস্তুত ছিলাম নাহ। আমি দেখি আমার বাজারের ব্যাগের মধ্যে সেই মেয়েটি সাপের মত কুন্ডলী ফাকিয়ে লাল শাকের পাশে বসে আছে আর এত বড় রুই মাছ টা তার মুখে পুরে চিবুচ্ছে।
আর আমার এত স্বাদের রুই মাছের শুধু লেজ টা অবশিষ্ট আছে। এটা দেখে আমি প্রচন্ড ভয় পাই। আমি আবার উলটা দিকে বাড়ির দিকে ব্যাগ ফেলে দৌড়াতে থাকি। পিছন থেকে ব্যাগের ভিতর থেকে বলতেছে আরে ব্যাগ টা তো নিয়ে যাহ।
আমি দৌড়াতে দৌড়াতে ঘরের দরজা সামনে এসে পড়ি আর আমার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
সকাল বেলা ঘুম ভাংগে এবং আমি সবাইকে ঘটনা খুলে বলি। পরে হুজুর এনে ঝাড় ফুক করা হয় আমাকে। বন্ধুরা ঘটনা এখানে শেষ হলেই ভালো হতো কিন্তু ঘটনা এখন ও বাকী আছে..
আমি এখনো যদি রাতে একা বাসায় থাকি বা রাস্তা দিয়ে হেটে যাই আমি শুনতে পাই সে গলার স্বর টা
” এই মাছ টা দিয়ে যা নারে” মাছ টা দিয়ে যা!!

 

( ভূতের রুই মাছ খাওয়া গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো তা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।

পরবর্তী গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানালাম। ধন্যবাদ।)

ভূতের রুই মাছ খাওয়া

সমাপ্ত